বরাবর,
মহাপরিচালক,
জাতীয় ফতোয়া বিভাগ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, আগারগাঁও, শেরে বাংলা নগর, ঢাকা-১২০৭, বাংলাদেশ।
বিষয়ঃ পরীর সাথে মানুষের বিয়ে, দাসীদের সাথে যৌন সম্পর্কের বৈধতা এবং দুনিয়াতে মানুষের মত ও মানুষের সাথে জ্বীনদের বসবাস, এ সম্পর্কিত প্রাসঙ্গিক বিষয়ে নিম্নে উল্লেখিত ১৬টি প্রশ্নের প্রতি উত্তর দেয়ার জন্য এবং যেহেতু জ্বীন আমায় ঘ্রাস করে আছে, তাই, আমার সীমাহীন এ যন্ত্রণাময় জীবন থেকে মুক্তির লক্ষ্যে লিখিত ভাবে উক্ত প্রশ্ন সমূহের ফতোয়া প্রদানের জন্য আবেদন (মুফতি হুজুরদের নাম, স্বাক্ষর ও তারিখ এবং ফাউন্ডেশনের সীলমোহর সহ)।
জনাব,
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। সবিনয় নিবেদন, ২০০১ সনে হাইস্কুলে শিক্ষকতা করা কালীন, একজন বা দু'জন জ্বীন অথবা একদল জ্বীন বা পরী আমার উপর আসর বা সাহর করে এবং সে থেকে আজ প্রায় সূ-দীর্ঘ ২৫ বছর তারা আমার শরীরেই অবস্থান করছে। গত প্রায় ১ বছরের উপরে হলো এরা আমার স্ব-জ্ঞানে, প্রকাশ্যে তারা আমার শরীরে দৃশ্যমান। যা আমার এলাকাবাসী জানে এবং যে কেউ ২/১ ঘন্টা আমার সাথে কথা বললেই বিষয়টি বুঝতে পারবে। আমার ধারনা মোতাবেক এ জ্বীনদের কেউ মুসলিম আবার কেউবা অমুলিমও হতে পারে; হয়তোবা তাদের কেউ আমার নিকট ইসলাম কবুল করতে চায়; এ রকমও হতে পারে। এখন দিনের প্রায় যে কোন সময়েই এরা আমার শরীরে সক্রিয় থাকে। এদেরকে খারাপ মনে করে, আমার আত্মীয়-স্বজন তাকে বা তাদেরকে তাড়ানোর জন্য বা মেরে ফেলার জন্য অনেক চেষ্টা-তদবীর করেছিলো। কিন্তু কোন ভাবেই তাকে বা তাদেরকে তাড়াতে বা মেরে ফেলতে পারেননি তারা। এ জ্বীন বা পরী আমার উপর আসর করার কারণে, ও যার সূত্র ধরে আজ আমার অর্থ-সম্পদ, চাকুরী-বাকুরী, ব্যবসা-বাণিজ্য সব হারিয়ে এখন আমার ও আমার পরিবারের ৬ জন সদস্যের জীবন প্রায় বিপন্ন হওয়ার পথে। অনেকটাই মানবেতর জীবন-যাপন করছি আমরা। যতদূর বুঝতে পেরেছি, আমার সাথে থাকা এ পরী জ্বীনটি বা জ্বীনদ্বয়; এরা মুসলিম এবং এও বুজেছি যে, এরা আল্লাহর রাসূলের (সাঃ) সাহাবী (রাঃ)। আমার বুঝ মতে, তারা আমায় বিয়ে করতে চায় (১/২ জন) এবং আমি এও ধারনা করছি যে, তার বা তাদের এ বিয়ে করতে চাওয়া; বা একটা দৃঢ় ও স্থায়ী সম্পর্ক তৈরী করতে চাওয়া; এটা শুধু তার বা তাদের বা আমার বা শুধু আমাদের ব্যক্তিগত প্রয়োজনে নয়; এটা মুসলিম সম্প্রদায় এবং পুরো মানব ও জ্বীন জাতির কল্যাণার্থে। আমি আরো বুঝতে পারছি যে, এ মহিলা জ্বীন বা জ্বীন সম্প্রদায় এতোটাই যোগ্য ও ভালো যে, যা কল্পনাতীত। এবং আমার আরো বুঝে ধরেছে যে, এ পরী জ্বীনগুলো আমাকে ছেড়ে কিছুতেই যাবে না, বা তাদেরকে তাড়ানোও সম্ভব হচ্ছে না বা হবে না। আগে না বুঝলেও, এখন আমি এ পরীটি বা পরীদ্বয় বা তাদের সম্প্রদায়কে ভালো মনে করছি। কারণ, আলহামদুলিল্লাহ! এর বা এ দলের প্রভাবে আমার কারেক্টার দিন দিন উন্নত হচ্ছে বলেই, আমার কাছে মনে হচ্ছে। আর তাই এখন আমিও এদেরকে (১ জন বা ২ জন পরী) বিয়ে করতে চাই এবং পুরো এ জ্বীন বা পরীর জাতকে যতটুকু সম্ভব আমার সাথেই রাখতে চাই। ও তাদের সাহায্যে মানুষ, জ্বীন এবং মুসলিমদের কল্যাণ হয়; এ ধরনের কাজ সমাধা করতে চাই। কিন্তু চাইলেইতো হবে না। ইসলামী শরিয়তে এর অনুমোদন থাকতে হবে। এবং আমাদের মানুষ ও জ্বীনদের, এ সম্প্রদায়কে তা মেনে নিতে হবে। যেহেতু ইসলামী শরিয়তের বাইরে আমরা কোন কাজ করতে পারবো না এবং যেহেতু মানুষ সমাজবদ্ধ জীব ও আমরা মুসলমান। কিন্তু এ সবের জটলা বা সমাধান; তারা আলাদা ভাবে, তাদের আলাদা শরীরে, আমার মুখোমুখি হাজীর হওয়ার মধ্যেই নিহীত বলেই আমি মনে করি। আর তাই, এবং এ হেতু আপনাদের স্বরণাপন্ন হয়ে, এবং তাদেরকে মানব আকৃতিতে আমার সাথে, আলাদা ভাবে, তাদের আলাদা শরীরে, আনতে চাওয়ার প্রচেষ্টা হিসেবে (তারা আসতে রাজী আছে বলে আমার বিশ্বাস হয়েছে, যেহেতু আমার শরীরে সক্রিয় হয়ে তারা নিজেরাই বলছে যে, তারা আসবে), ও এ প্রাসঙ্গিক, নিম্নে পর পর ১৬ টি প্রশ্ন উল্লেখ করছি। যার লিখিত উত্তর হাতে পাওয়া ছাড়া, বা এ বিষয়ক আপনাদের মতো এমন যথাযথ মুসলিম কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদানকৃত আইনগত গ্রহণযোগ্যতার সনদ হাতে পাওয়া ছাড়া এবং মানুষকে তা প্রদর্শন ও রেফারেন্স আকারে তা সংরক্ষণ এবং এর মাধ্যমে জ্ঞান অর্জনের ব্যবস্থা ছাড়া, এ জ্বীন বা পরীর দলকে মানুষের আকৃতিতে বা তাদের নিজস্ব অবয়বে হাজীর করতে পারবো বলে, বা এদের মাধ্যমে কোন কাজ সমাধা করতে পারবো বলে আমার মনে হচ্ছে না। এখানে বিশেষ ভাবে উল্লেখ্য যে, আমার কাছে মনে হয়েছে, এদের কাছে নগদ ধন-রত্ন ও স্বর্ণ-অলংকার রয়েছে। এছাড়া আমার কাছে আরো মনে হয়েছে, এরা মানুষের জটিল ও কঠিন রোগের চিকিৎসা করে আরোগ্য করতে পারবে। আর যদি তাদের এ জাতীয় অর্থনৈতিক এবিলিটি ও এ ধরনের রোগ চিকিৎসার যোগ্যতা থেকে থাকে, তাহলে তা এ মহাবিশ্বের মানুষের জন্য হবে একটি সম্পদ। এ বিষয়ে আপনারা প্রয়োজনে আমার ইন্টারভিউ বা স্বাক্ষাতকার নিতে পারেন। যার মাধ্যমে আমি নিজকে নিজেও চিনতে পারবো বলে মনে করি। ইনশা'আল্লাহ! এ বিষয়ে আপনাদের আহবান পেলে আমি তৎক্ষণাত আপনাদেরকে স্বাক্ষাতকার দিতে প্রস্তুত রয়েছি। তাই আশা করি বিস্তারিত পড়ার পর আমার প্রশ্ন সমূহের সঠিক উত্তর প্রদান করে ও এ জাতিকে ওপেন করার প্রচেষ্টায় আমার সহযোগী হিসেবে, আমাকে আপনাদের কৃতজ্ঞতার পাশে আবদ্ধ করবেন এবং মানুষ ও জ্বীন জাতির সেবা করার জন্য সুযোগ করে দিবেন। প্রশ্ন সমূহ নিম্নরুপ-
১। আমি বুঝতে পারছি যে, একজন বা দু'জন মহিলা জ্বীন, মুসলিমদের প্রয়োজনে ও মানব এবং জ্বীন জাতির কল্যাণার্থে আমাকে বিয়ে করতে চায়। আত্মমানবতার মুক্তি ও মানুষের সেবার লক্ষ্যে আমিও তাকে বা তাদেরকে বিয়ে করতে চাই। (উপরের আলোচনায় উল্লেখিত)। তাকে বা তাদেরকে বিয়ে করা, আমার জন্যে জায়েজ হবে কিনা? পবিত্র কোরআন শরীফ ও হাদীস শরীফে এ বিষয়ে কোন ধরনের নিষেধাজ্ঞা আছে কিনা? থাকলে সেটি কী? পবিত্র কোরআন ও সহীহ্ হাদীসের সূত্র সহ তা উল্লেখ পূর্বক বুঝিয়ে দেয়ার জন্য অনুরোধ রইলো। অর্থাৎ পবিত্র কোরআন শরীফের কোন্ আয়াতে এবং পবিত্র হাদীস শরীফের কোন্ হাদীসে ইহা লিখা আছে যে, বা প্রমাণ করা যায় যে, মানুষ এবং জ্বীনের মধ্যেকার বিয়ে নাজায়েজ; সে আয়াতে কারীমা ও সংশ্লিষ্ট হাদীস উল্লেখ পূর্বক, তা বুঝিয়ে দেয়ার জন্যই অনুরোধ করছি। পবিত্র কোরআন ও হাদীস শরীফে যদি কোনরুপ নিষেধাজ্ঞা নাই'ই থাকে, তাহলে এটি নাজায়েয হবে কেন? আর যদি নাজায়েজ হয়ও, তাহলে সেটি কখন হবে (?); এবং এ বিষয়ক রোকনের ও এ নিষেধাজ্ঞার তুল্যমান কী হবে, মানে সেটি কি হারাম হবে (?), না মাকরূহে তাহরীমী হবে, না মাকরূহে তানজীহী হবে এবং কেন হবে? এ মাসআলাটির সঠিক প্রতিউত্তর প্রদানের জন্য আবেদন। আপনাদের উত্তর যদি হ্যাঁ-বোধক হয়, মানে আমার পক্ষে বিয়ে করা জায়েজ হয়, তাহলে ইহা আমলে পরিণত করতে আর কোন মাদরাসার বা মুফতি সাহেবদের অনুমতির প্রয়োজন আছে কিনা? অর্থাৎ নূন্যতম কয়টি মাদরাসা বা কয়জন মুফতি/স্কলার থেকে হ্যাঁ বোধক উত্তর পেলে, এ মাসআলাটি ইজমায়ে উম্মত হিসেবে আমল করা যাবে? ইজমায়ে উম্মত না হলে আপনাদের প্রদানকৃত এ উত্তরটি কি আমলে পরিণত করা যাবে না? স্বচ্ছ, ক্লিয়ার কাট ও স্পষ্ট ভাবে এ বিষয় গুলো জানানোর জন্য আবেদন।
২। আমরা জানি বিয়েতে কনের অভিভাবকের সম্মতি প্রয়োজন ও অত্যাবশ্যক। এখন যে নারী অন্য ধর্ম ত্যাগ করে মুসলমান হবে বা হয়েছে, তার অভিভাবকতো তাকে সম্মতি দেয়ার প্রশ্নই উঠেনা এবং কনেও তার কাফের মা-বাবার কাছে বা তাদের কারো কাছে গিয়ে, তার অভিভাবকের সম্মতি আনা বা তাদের কাউকে নিয়ে আসার সুযোগ নেই। এমতাবস্থায় এ নওমুসলিম বা হবু মুসলিমের বিবাহের ক্ষেত্রে অভিভাবকের সম্মতি বিহীন বিবাহ বৈধ হবে কিনা? বা এ ক্ষেত্রে শরয়ী বিধান কী? আবার এ রূপ বিয়ের ক্ষেত্রে কনে যদি জ্বীন হয়, তাহলে তার ক্ষেত্রেও কি একই বিধান প্রযোজ্য হবে?
৩। আমরা জানি, বিয়েতে কমপক্ষে ২ জন পূরুষ বা ১ জন পূরুষ ও ২ জন নারীর স্বাক্ষ্য প্রয়োজন। এক্ষেত্রে কনে যদি নওমুসলিম হয়, তাহলে এ ক্ষেত্রেও, তার পক্ষে, সে স্বাক্ষী কোথায় পাবে? তাহলে, যে কোন একপক্ষ থেকে স্বাক্ষী হলে, সে বিয়ে বৈধ হবে কিনা? অথবা এ ক্ষেত্রে ইসলামী বিধান কী? এবং কনে যদি জ্বীন হয়, যেমনটি আমার সমস্যা, তাহলে শুধু আমার পক্ষীয়, মানে শুধু মানুষের স্বাক্ষ্য হলে, তাহলে এ বিয়ে বৈধ হবে কিনা?
৪। কনে যদি জ্বীন হয় এবং তিনি যদি মুসলিম জ্বীন পরিবারের সন্তান হন, তাহলে, উপরোক্ত দুটি বিষয়ে (কনের অভিভাবকের সম্মতি ও স্বাক্ষী) ইসলামের বিধান কী? অর্থাৎ জ্বীন হলে কোনরূপ পরিবর্তন হবে কিনা?
৫। উপরোক্ত ২টি বিষয় কি লিখিত হতে হবে? না, মৌখিক সম্মতি ও মৌখিক স্বাক্ষ্য হলেও চলবে? বিশেষ করে, কনে যদি জ্বীন হয় (যেমন আমার সমস্যা) এবং তাদের কেউ যদি লিখাপড়া না জানে? আবার বিষয় দু'টি লিখিত না হলে, তখন মানুষ বা জ্বীনদের নিকট আমি, আমাদের এ বিয়ের প্রমাণ কিভাবে উপস্থাপন করবো? এ বিষয়ে ইসলামের হুকুম কী হবে?
৬। ইতিপূর্বে আপনাদেরকে আমি জানিয়েছি যে, বর্তমানে আমি খুবই গরীব, অর্থ-সম্পদহীন, অসহায়, নিঃস্ব এবং অনেকটা ইয়াতিমের মতো! তার উপর বিষয়টি হচ্ছে, একটি ব্যতিক্রম ও নতুন সমস্যা; আর তা হচ্ছে জ্বীনের সাথে বিয়ে বিষয়ক। তাহলে আমাকে সাহর করা এ জ্বীনটি যদি মহিলা হয়, তবে আমাদের এ বিয়ের মোহরানা কিভাবে নির্ধারণ করবো? এ বিষয়ে নিম্নে উল্লেখিত আয়াত, হাদীস ও বেহেশতী জেওরে উল্লেখিত মাসআলা অনুযায়ী এখন বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর, পরবর্তীতে দাম্পত্য জীবনের সুবিধাজনক সময়ে আমরা স্বামী ও স্ত্রী উভয়ে মিলে নূন্যতম বা অনেক বেশি করে মোহরানা ধরলে, তাহলে এ সব সূরতে বিয়ে শুদ্ধ হবে কিনা? তা না হলে মোহরানা নূন্যতম কত ধরলে, তবে এ বিয়ে শুদ্ধ হবে?
আয়াতঃ আর তোমরা স্ত্রীদেরকে তাদের মোহর দিয়ে দাও খুশীমনে। তারা যদি খুশি হয়ে তা থেকে অংশ ছেড়ে দেয়, তবে তা তোমরা স্বাচ্ছন্দ্যে ভোগ কর।” [সূরা নিসা : আয়াত ৪)
হাদীসঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) জনৈক ব্যক্তিকে মোহরানা বাবদ লোহার আংটি হলেও আনতে বলেন, তাতে অক্ষম হলে শুদ্ধভাবে কোরআন শিক্ষা দেয়ার কথা বলেন। (মিশকাতুল মাসাবীহ ৩২০২)
বেহেশতী জেওরঃ বিয়ের পর স্বামী-স্ত্রী উভয়ে একত্রিত হয়ে যদি মোহর কী দিতে হবে বা কী পরিমাণ দিতে হবে, তা ঠিক করে, তবে তাও শুদ্ধ হবে। (বেহেশতী জেওর, ৪র্থ খন্ড, ২য় ভলিউম, এমদাদিয়া লাইব্রেরী, মাসআলা নং ১০)
কিন্তু আলেমগণ মোহরের সর্ব নিম্ন পরিমাণ ১০ দিরহাম বা (প্রায় পৌনে তিন তোলা রুপা) নির্দিষ্ট করেছেন। (বেহেশতী জেওর, ৪র্থ খন্ড, ২য় ভলিউম, এমদাদিয়া লাইব্রেরী, মাসআলা নং ২)
৭। আমার জানামতে, স্থানীয় প্রশাসনের দেশীয় আইন মেনে চলা মুসলমানদের উপর ইসলাম ওয়াজিব করেছে। আবার বরের বাড়িতে প্রকাশ্যে অলিমা অনুষ্ঠান করে বিয়ে সম্পন্ন করাই ইসলামী আইন অনুযায়ী উত্তম হিসেবে সাব্যস্তকৃত বা বিবেচিত রয়েছে। অপরদিকে স্থানীয় প্রশাসন কর্তৃক এ দেশের অনেক বিয়ে এবং বিয়ের অনুষ্ঠান বাতিল ও গ্রেফতার, জরিমানার ঘটনা এ দেশে অনেক রয়েছে। সব মিলিয়ে যদি জ্বীন এ ধরনের বড় ধরনের অলীমা অনুষ্ঠান করা ব্যতীত বিয়েতে রাজী না হয়, অথবা এ ধরনের সিদ্ধান্ত ব্যতীত সে নাই আসে; তাহলে এ বিষয়ে আমার কী করণীয়? অর্থাৎ জ্বীনের সাথে আমার এ বিয়ে এবং বিয়ের ওলিমা অনুষ্ঠান উদযাপন করতে আমাকে কি ইসলাম অনুযায়ী স্থানীয় প্রশাসনের লিখিত অনুমতি নিতে হবে? যেহেতু স্থানীয় প্রশাসনকে মেনেচলা দেশের নাগরিক হিসেবে আমার উপর ওয়াজিব, তাই এ ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসনের লিখিত অনুমতি না নিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান বা বিয়ে সম্পন্ন করলে, তবে এতে কি আমার কবীরা গুনাহ হবে? যেহেতু এখানে স্থানীয় প্রশাসনের সাথে বিয়ে পরবর্তী সন্তানদের টিকা প্রদান, জন্ম নিবন্ধন, এনআইডি কার্ড ইত্যাদি জড়িত। তা না হলে স্থানীয় প্রশাসন যদি বিয়ের অনুষ্ঠান ভেঙ্গে দেয়? অথবা এ বিষয়ে আপনাদের পরামর্শ কী?
৮। বিয়ের ক্ষেত্রে আরেকটি মোস্ট ইমপরটেন্ট বিষয় হচ্ছে, বিয়ের কাবিননামা বা সরকার কর্তৃক বিয়ে রেজিস্ট্রিকরণ দলীল। আবার এটি এতোই গুরুত্বপূর্ণ যে, কোন দেশে সফরে গিয়ে নিজের বউকেই বউ হিসেবে পেতে হলে, প্রয়োজন হতে পারে, এ কাবিননামা দলীলটি বা এর ফটোকপি। অর্থাৎ বিষয়টা এমন যে, এ কাবিননামা দলীল ব্যতীত পরবর্তীতে হয়তো, নিজের বউকেই বউ হিসেবে পাওয়া যাবে না বা নাও পাওয়া যেতে পারে। জ্বীন ও মানুষের বিয়ের বিষয়ে এবং নরমালি শুধু মানুষের বিষয়ে, এ ব্যাপারে ইসলামী সমাধান কি? ইসলামী আইন অনুযায়ী বরকে অথবা কনেকে অথবা তাদের পক্ষীয় কাউকে (অথবা বরকে না কনেকে?) কি বিয়ে রেজিস্ট্রি করণের জন্য সরকারের প্রতি আবেদন করতে হবে? অথবা যেহেতু জ্বীন ও মানুষের বিয়ের বিষয়টি এ পৃথিবীতে নতুন, তাই আপাতত যারা এ বিয়ে জায়েজ বলে ফতোয়া দিয়েছেন এবং প্রশাসনের যারা বিয়ে ও বিয়ের অনুষ্ঠানের অনুমতি দিয়েছেন এবং যারা এ বিয়ের অলিমা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, তাদের সকলের অথবা তাদের সকলের পক্ষে কমপক্ষে ৪০ জনের স্বাক্ষ্য ও স্বাক্ষর সহ একটি লিখিত প্রমাণ পত্র বর কর্তৃক প্রস্তুত করতে হবে? না আমার জ্বীন বউকে আদালতে হাজীর করে, বিজ্ঞ বিচারক কর্তৃক এফিডেভিট সনদ সংগ্রহ করাটা উচিৎ হবে? নতুবা যখন আমরা সফরে যাবো বা যে কোন প্রয়োজনে যখন আমরা ভিন দেশে যাবো, তখন আমরা যে স্বামী-স্ত্রী (মানুষ ও জ্বীন); মানুষ ও জ্বীনদেরকে এ বিয়ের প্রমাণ স্বরূপ তাদের নিকট আমরা কী প্রমাণপত্র উপস্থাপন করবো? অথবা এ বিষয়ে ইসলামের বিধান ও আপনাদের পরামর্শ কী?
৯। দেখুন, হাদীসের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, জ্বীন ৩ আকৃতিতে থাকতে পারে। (১) তার নিজস্ব অবয়বে (২) মানুষসহ বিভিন্ন জীব ও জড় পদার্থের আকৃতিতে (৩) নিরাকার বা শূন্যের মতো হিসেবে। যা একজন জ্বীনের মৌলিক অধিকার হিসেবেই বিবেচিত। ইসলামে স্বামীর বৈধ হুকুম পালন করা স্ত্রীর উপর ওয়াজিব। কিন্তু জ্বীন যদি স্ত্রী হয় এবং উপরোক্ত বিষয়গুলো যদি জ্বীনের মৌলিক অধিকার হয়, তাহলে এ মহিলা জ্বীনকে কি তার মানব স্বামী, মানে আমি, এ বিষয়ক হুকুম দিতে পারবো যে, তাকে সব সময় শুধু মানব আকৃতিতে থাকতে হবে, বা শুধু এই এই ভাবে থাকতে হবে, না এ বিষয়টি জ্বীনের মৌলিক অধিকার বিধায়, এ বিষয়ে মানব স্বামীর, মানে আমার কোন অধিকার থাকবে না, তার উপর হস্তক্ষেপ করার। এরপরও এ বিষয়ে শরিয়তের বিধান কী হবে? যেহেতু স্ত্রী হাওয়ায় মিলিয়ে থাকবে, অথবা অন্য আকৃতিতে থাকবে, আর মানব স্বামী, স্ত্রীর নিকট তার হক গুলো পাবে না; ইচ্ছায় কিংবা অনিচ্ছায় কিংবা ঝগড়া অথবা ছলনা করে স্বামীকে তার হক থেকে বঞ্চিত করবে, এটাতো হতে পারে না। তাহলে এ বিষয়ে শরিয়তের দিক-নির্দেশনা বা বিধান কী হবে?
১০। জ্বীন প্রকাশ্য ভাবে পৃথিবীতে তার নিজস্ব শরীরে বা মানব আকৃতিতে বা অন্য যে কোন আকৃতিতে বা নিরাকার ভাবে আসতে পারবে না, এবং মানুষের সাথে সহাবস্থান হিসেবে বসবাস করতে পারবে না, বা এ ধরনের কোন অধিকার জ্বীনের নেই; এ জাতীয় কোন কোরআনের আয়াত বা সহীহ্ হাদীস আছে কিনা? থাকলে কোন্ আয়াতে বা কোন্ হাদীসে তা রয়েছে? আয়াত বা হাদীস শরীফটি উল্লেখ পূর্বক তা বুঝিয়ে দেয়ার জন্য অনুরোধ করছি। আর সহীহ্ সনদে যদি কোন সূত্র না থাকে, তবে কোন্ সনদে বা সূত্রে বা কোন্ অধিকারে নির্ণীত বা নির্ধারিত করা যাবে যে, মানে ফতোয়া দেয়া যাবে যে, জ্বীন বা জ্বীনদের দুনিয়াতে আসা এবং মানুষদের সাথে বা তাদের পাশাপাশি বসবাস করা নাজায়েজ হবে? বা তাদের এ বিষয়ে কোন অধিকার নেই? যেহেতু জায়েজ-নাজায়েজ বা ফতোয়া নির্ধারিত হয়, কোরআন ও হাদীসের ভিত্তিতে; যুক্তি কিংবা জ্ঞান-বিজ্ঞান বা আমাদের ধারনা অনুযায়ী নয়; সেহেতু জ্বীন যদি দুনিয়ায় প্রকাশ্য ভাবে আসতে চায়, তবে জ্বীনের জন্য তা কেন অবৈধ হবে? এবং মানুষগণ তাদেরকে সুযোগ না দেয়ার বা প্রতিবন্ধক করে রাখার বা অসহযোগিতা, হিংসা বা শত্রুতা করার কোন অধিকার, মানুষদের আছে কিনা বা থাকতে পারে কিনা?
১১। জ্বীনগণ আল্লাহু তা'য়ালার আইন ও প্রচলিত আইন-কানুন মেনে প্রকাশ্যে মানুষের মতো, মানুষের আকৃতিতে বা স্থান, কাল, অবস্থা ও পাত্র ভেদে, প্রয়োজন অনুযায়ী, স্বাভাবিক ও শান্তিপূর্ণ উপায়ে, এবং জ্বীন পরিচয়ে একক ভাবে বা যৌথ ভাবে, মানুষের মতো, জমি ক্রয় করে তাদের নামে বাড়ি-ঘর নির্মাণ, কিংবা অফিস-আদালত বা কল-কারখানা স্থাপন ও পরিচালনা, অথবা ব্যবসা-বাণিজ্য ও ক্রয়-বিক্রয় করা, অথবা লেখাপড়া অথবা চাকুরী-বাকুরি, ইত্যাদি মানুষের যে কোন কাজ, মানুষের সাথে মিলেমিশে ও আলাদা ভাবে, জ্বীন যদি সম্পন্ন করার শক্তি, সামর্থ ও যোগ্যতা রাখে; তবে তা সম্পন্ন করার বা মানুষের সাথে জ্বীনকে অংশীদার করার, জ্বীন বা জ্বীনদের অধিকার থাকবে কিনা? আমি বলছি না যে, দুনিয়াতে মানুষের মতো ঘর-বাড়ি করে, জ্বীনদের থাকার এতো প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বা থাকতে পারে। তবে আমি বলতে চাচ্ছি, যে কারণেই হোক না কেন, যদি জ্বীন জাতি, কিংবা জ্বীন জাতির কোন সদস্য, অথবা জ্বীন জাতির কোন সম্প্রদায় দুনিয়ার সম্পত্তির অধিকার নিয়ে যদি আসতে চায় এবং সম্মানের সহিত মানুষের মতো প্রকাশ্যে, মানুষের পাশাপাশি বসবাস করতে চায়; তবে তাকে বা তাদেরকে, তাদের এ ন্যায্য হক না দেয়ার বা বঞ্চিত করার কোন অধিকার বা অথরিটি পবিত্র কোরআন শরীফ বা হাদীস শরীফের মাধ্যমে রব কর্তৃক মানুষকে বা মানুষদেরকে দেয়া হয়েছে কিনা? যদি মনে করেন যে, হ্যাঁ, দিয়েছে। তবে দয়া করে লিখবেন সেটি কিভাবে এবং পবিত্র কোরআন শরীফের কোন্ আয়াত ও হাদীস শরীফের কোন্ হাদীস অনুযায়ী মানুষ সেটি পেল যে, তারা দুনিয়ার কোন সম্পত্তি ক্রয় করে এর মালিক হতে পারবে না? বা মানুষের মতো প্রকাশ্যে কোন দায়িত্বপূর্ণ কাজের অধিকারী হয়ে তা পরিচালনা করতে পারবে না? অনুগ্রহ পূর্বক এ সূত্র বা সনদটি জানতে চাই।
যদি জ্বীনদেরকে তাদের এ হক, মানুষ বা মানব জাতি না দিতে চায় এবং সম্পূর্ণ বেআইনি, দখলদার ও সৈরাচারী ভাবে এ পৃথিবীতে ও সৃষ্টিজগতের মধ্যে তাদেরকে এ ধরনের অধিকার ও দায়িত্ব মানুষেরা জোর ও জুলুম করে না দেন বা না দেয়ার সিদ্ধান্তে মানুষগণ অটল থাকেন, বা না দিতে চান; তবে অন্যায়কারী হিসেবে মানুষকে বা মানুষদেরকে বাধ্য করার বা এর সমূচিত জবাব দেয়ার বা অস্ত্র হাতে তুলে নেয়ার এ অধিকার জ্বীন বা জ্বীন জাতির বা জ্বীনের পক্ষে কোন মানুষের বা ন্যায় পরায়ন একদল মানুষের থাকবে কিনা? এবং এ ধরনের জ্বীন বা তাদের পক্ষে ন্যায়পরায়ন মানুষদের কি তখন কোন গুনাহ হবে? এ পৃথিবীর সমস্ত সম্পদের মালিক কি আল্লাহ নয়? আল্লাহ কি মানুষ ও জ্বীন, উভয় জাত সৃজন করেননি? এবং যিনি সব কিছুর প্রকৃত মালিক, তিনি তাঁর কালাম, কোরআন হাদীসের কোথাও যদি শুধু মানুষদেরকে এ অধিকার না দেন এবং এরপরও মানুষেরা বা কিছু মানুষ অন্যায়কারী ও জবরদখলদার হিসেবে, যদি মনে করে যে, জ্বীনের বা জ্বীন জাতির, এ ধরনের কোন অধিকার নেই; তাহলে এ ধরনের মানুষের সম্পদের মালিকানা ও তাদের উপার্জন কি হালাল ও জায়েজ হবে? অর্থাৎ এ ধরনের মানুষের কি তখন গুনাহে কবীরা হবে না? হ্যাঁ, সিস্টেম না থাকার কারণে হোক বা যে কারণেই হোক না কেন, এতোদিন হয়তো জ্বীন আসে নাই বা আসতে পারেনাই; এখন যখন আসতে চাইছে বা যেহেতু তাদের আসার বা বসবাসের অধিকার রয়েছে, তাই এখন থেকে ভবিষ্যতের যে কোন সময়ের জন্য, এ পৃথিবীতে বা আল্লাহর এ মহা সৃষ্টির যে কোন স্থানে মানুষের পাশাপাশি, মানুষের সাথে জ্বীন বা জ্বীন জাতি বসবাসের আইন প্রণয়ন বা সংশোধন করে, তাদের এ ন্যায্য হক প্রদান করা বা প্রদান করার ছিলছিলা জারি করা; এটা মানুষের নিকট, তার নৈতিক ও ঈমানী দায়িত্ব হিসেবে জ্বীন জাতি প্রাপ্য কিনা? প্রাপ্য হলে এ ধরনের আইন প্রণয়ন ও সংশোধনের প্রয়োজন রয়েছে কিনা?
১২। আম ভাবে প্রায় সব মানুষের একটা ধারণা হলো, জ্বীন মানুষের খাদ্যের উচ্ছ্বিষ্ট যেমন, কাঁটা-কুটা, হাঁড়-গোড় খায়, এছাড়া গোবর ও ময়লা খায়। আমি মানলাম এটা রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন। কিন্তু তিনি এই বলেননি যে, জ্বীন মানুষের ভালো ভালো খাওয়ার গুলো খেতে পারবেন না। আসলে কি ভালো, ভদ্র ও মুমেন জ্বীন, মানুষ যেসব উচ্চাভিলাশি খাওয়ার খায়, তা খেতে পারে না? না তা খাওয়ার যোগ্যতা রাখে না? এছাড়া জ্বীনের নাম নিলেই মানুষ তাকে শয়তান মনেকরে। আমি বুঝতে পেয়েছি, জ্বীন বলতেই মানুষ একটা খারাপ কিছুকে বুঝতে পায়। এর কারণ কী? মানুষের মধ্যে এ ধারনার উৎস কোথায়? মানব জাতির মধ্যে কী জ্ঞান বা তথ্য রয়েছে যে, জ্বীন মানেই ভয় আর খারাপের প্রতিক? না জেনে, বা না বুঝে কারো বিষয়ে নেগেটিভ জ্ঞান ও নেগেটিভ দৃষ্টিভঙ্গি রাখা; এটা কি মানুষের একটি কবীরা গুনাহ নয়? যার শীকার বা ভূক্তভূগী আমি!! আর আমি হাঁড়ে হাঁড়ে টের পাচ্ছি; মানুষের এ ভাবধারার কারণে আমি কী পরিমাণ মজলুম হয়েছি বা হচ্ছি!? এ ব্যাপারে ইসলামের শিক্ষা কী? ইসলাম কী এ শিখায় যে, কাউকে বা কোন জাতিকে বিনা যুক্তিতে অসম্মানজনক ভাবে বিবেচনা করতে হবে? মানুষ হয়তো এ জাতির খারাপ গুলোকে দেখেছে; কিন্তু ভালো গুলোকে কি দেখেছে!? আমি স্পষ্ট দেখতে পারছি; এ পৃথিবীকে মানুষ যেভাবে অশান্ত করছে; জ্বীনকেতো কই সেভাবে আমি দেখছি না! তাছাড়া যার খাদ্য যা, সে তা খাবে; যার স্বভাব যা, সে তা করবে; এতে অসম্মানের কী আছে; তা তো আমি বুঝিনা! মানুষকে শ্রেষ্ঠ করে সৃষ্টি করা হয়েছে খাটো দেরকে, ছোট দেরকে অসম্মান করে দেখার জন্য নয়, তাদের সাথে ইতর ব্যবহার করার জন্য নয়; বরং তাদেরকে ভালোবেসে, সম্মান করে আন্তরিক ও উদার ব্যবহার করার জন্য! কিন্তু দুঃখ ও আফসোসের বিষয় হচ্ছে, মানুষ এর উল্টো হয়েছে! আর যদি রবের সৃষ্টি হিসেবে, জ্বীন এতোই খারাপ হয়; তাহলে তোমার সৃষ্টি যদি হয় এতো সুন্দর, না জানি তাহলে..., এ ধরনের বুলি আওড়ানো, মানুষের মুখে কি শোভা পায়? তাহলে আমার সাথে সাথে মানুষদেরকে, এ জাতীর স্বরূপ উন্মোচিত করার চেষ্টা করা বা এ বিষয়ে আমাকে সহযোগিতা করা মানুষদের উচিৎ নয় কি? দয়া করে এ বিষয়ে ইসলামী জ্ঞান কী হতে পারে, তা পরিপূর্ণ ভাবে বুঝিয়ে লিখে; এ বিষয়ে আমাকে ও মানুষদেরকে ধন্য করতে আহবান জানাচ্ছি।
১৩। আল্লাহু তা'য়ালা জ্বীন সৃষ্টি করেছেন, যা শতভাগ সত্য। কিন্তু বিজ্ঞান এবং বিজ্ঞানীগণ আজো, আল কোরআনের এ বাণীকে বিশ্বাস করে না। মানে বিশ্বের প্রায় অর্ধেক মানুষ জ্বীন জাতি নামে একটি জাতিকে যে মহান রব সৃষ্টি করেছেন, মানে আল কোরআন যে সত্য বলেছে, তা তারা স্বীকার ও বিশ্বাস করতে রাজী না। অথচ আল্লাহ বলছেন, এ কিতাবে মিথ্যার লেশমাত্রও নেই। তাহলে আল্লাহর এ কিতাবকে সত্যরূপে বিশ্বের মানুষের কাছে প্রতিষ্ঠিত করার এ দায়িত্ব কি মুসলমানদের নয়? তাহলে আল কোরআনের এ সত্যতা কি শুধুই আল্লাহর কাছে? কই, বেশির ভাগ মানুষদের কাছেতো আল কোরআনের এ বিষয়টি এখনো সত্য নয়! যদিও মুসলমানগণ বিশ্বাস করেন, তবুও কিন্তু তারা জ্বীনের বিষয়ে তেমন কিছুই জানেন না। যা জানেন, তার বেশির ভাগই অনুমান, ধারনা আর মনগড়া যুক্তি নির্ভর। এগুলো কখনো প্র্যাক্টিক্যালি নয়। ফলে জ্বীনের বিষয়ে মানুষের এ জ্ঞানগুলো হয়তোবা অনেকটাই মিথ্যা এবং জ্বীন ও মানুষের বিয়ের পর, সন্তান হবে না বলে, মানুষগণ যে ধারণা পোষণ করে, এ বিষয়টিও প্র্যাকটিক্যালী জ্ঞানের মাধ্যমে কিন্তু মানুষ বলছে না। ফলে মানুষের এ বিষয়ক জ্ঞানটিও হয়তোবা মিথ্যাই প্রমাণিত হতে পারে। হয়তো কোন কোনটি সত্যও হতে পারে! তবুও, কিভাবে নিজের রবকে, নিজেদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থকে সত্যরূপে অবিশ্বাসীদের মাঝে প্রদর্শন করে তাদেরকে ঈমান আনয়নে সহযোগিতা করা যায়, এবং নিজেরাও বিষয়টি কিভাবে আরো ভালোভাবে বুঝতে পারা যায়; সে প্রচেষ্টা চালানো, তা কি দ্বীনের জ্ঞান-অর্জন এবং দাওয়াত ও তাবলীগের কাজের অংশ নয়? এবং এ হুকুম কি রব থেকে নয়? আজ যদি জ্বীনকে ওপেন করা যায়, তাহলে অবিশ্বাসীদেরকে বলা যেত, এই দেখ! এটিই জ্বীন! যা তোমরা অবিশ্বাস করতে! ফলে কিছু মানুষ হয়তো ঈমান আনতো!
আর এটি সত্য যে, রবের সৃষ্টি হিসেবে, এ দায়িত্ব শুধু মানুষের নয়; জ্বীনেরও! হয়তোবা এ জন্যেও আমার মাধ্যমে এ জ্বীন বা জ্বীন সম্প্রদায় ওপেন হতে চেয়ে আমার শরীরে বিভিন্ন উপস্বর্গ প্রকাশ করছে ও আমাকে এবং মানুষদেরকে বিভিন্ন আকার ইঙ্গিত প্রকাশ করছে যে, সে দুনিয়াতে মানুষের কাছে, মানুষের পাশে তার আলাদা অবয়বে বা মানুষ রূপে আসবে। তবে এ বিষয়ে আমি যতটুকু বুঝতে পেরেছি যে, আমার সাথের এ জ্বীন বা জ্বীন সম্প্রদায়, মানুষের মত সম্পত্তির মালিক হিসেবে এবং অন্যান্য ক্ষেত্রেও সম্মানিত ভাবেই আসতে চায়; যেহেতু এ মালিকানা পাওয়া, এটি তাদের অধিকার! শুধু পরগাছা হিসেবে, আমার শরীরে সাহর করে আসতে চায় না। যেহেতু পরগাছা হিসেবে এলে, তেমন কোন কাজ ফলপ্রশু ভাবে সমাধা করতে পারা যাবে বলে মনে হয় না।
আমি মনে করি, দাওয়াত ও তাবলিগ এবং অন্যান্য দ্বীনী কাজের অংশ হিসেবে জ্বীনকে মানবরূপে বা তার নিজস্ব অবয়বে প্রকাশ করার, এ প্রচেষ্টায় অংশগ্রহণ করা বা এ কাজে আমাকে সাধ্যমত সহযোগিতা করা প্রতিটি মুমেন মানব ও জ্বীনের ঈমানী দায়িত্ব।
অথচ বড়ই আফসোস ও পরিতাপের বিষয় হচ্ছে, এ পর্যন্ত গত ২৫ বছরে মিলে আমি হাতে গোনা ২/১ জন লোক ছাড়া আর কাউকেই পাইনি আমার এ ধরনের কাজের সমর্থক বা সাথী বা সহযোগী হিসেবে। তাও শুধুমাত্র বর্তমান সময়ে মানুষের মাঝে এ বিষয়ে একটু একটু পজেটিভ জ্ঞান প্রবেশ করছে হয়তোবা। আবার এদের মধ্যেও, কতককে কেবলমাত্র আমার প্রতি তাদেরকে স্বার্থবাজ বা ধান্দাবাজ হিসেবেই দেখতে পেয়েছি! আর সমাজের বাকি সব গুলো মানুষ, অজ্ঞতা হেতু হোক বা যে কারণেই হোক, আমাকে যে কিভাবে ও কেমন কষ্ট দিয়েছে, তা হয়তোবা ভাষায় বর্ণনা করা সম্ভব হবে না আমার! অনেক সময় ভাবতাম, এদের বিবেক আর হৃদয় বলতে কি কিছুই নেই! কেমন করে মানুষ এতো দয়া-মায়াহীন আর এতো নিষ্ঠুর হতে পারে!! আফসোস্ আমার, গত ২৫ বছরে একটি লোককেও দেখতে পাইনি যে, যে আমাকে ভালোবেসে অন্তর থেকে বলবে; তোমার কী হয়েছে! এবং কিভাবে সমাধান করা যায়! আস একটু চিন্তা করি! ফিকির করি! এভাবে বন্ধুত্ব আর ভালোবাসার হাত বাড়িয়ে আমাকে একজন লোকও কাছে ডেকে নেয়নি। সবাইকে দেখলাম শুধু স্বার্থবাদি আর হিংসুটে ব্যবহার করতে! আমাকে দূর দূর করে রাখতে পারলে অথবা মাটি চাপা দিতে পারলেই যেন তারা বাঁচে! সবার এমনই একটি ভাবধারা যে, সমস্যা শুধু মনে হয় আমার একার!; কোরআনের বাণী বা কোরআনের বিধানের মান সমুন্নত রাখার দায়ীত্ব শুধু মনে হয় আমার একজনের! তারা শুধু বৈধ হোক আর অবৈধ হোক পেট ভরে খাওয়ার ধান্দা করতে পারলে; আর মানুষের কাছে ক্ষমতা ও সম্মান ছিনতাই করতে পারলেই যেন তাদের মহা সাফল্য!!
আবার জ্বীনের নাম শুনলেই প্রায় সব মানুষই, তাকে বা তাদেরকে খারাপ মনে করে। যেহেতু আল্লাহ্ সুন্দর, তাই তাঁর সৃষ্টি হিসেবে জ্বীন এতো অসুন্দর হতে পারে না। যেহেতু স্রষ্টা যে সুন্দর!! এ যুক্তিটি মানুষের মাথায় একেবারেই মনে হয় নেই। সুতরাং সব মিলিয়ে জ্বীনকে ওপেন ভাবে দেখতে চেষ্টা করা, এবং জ্বীন নিজকে নিজেও মানুষের নিকট ওপেন হওয়া এবং এভাবে নিজের সৃষ্টিকর্তার সঠিক পরিচয় প্রকাশ করা; এ বিষয়ে জ্বীন ও ইনসান উভয়েরই দায়িত্ব রয়েছে বলে আমি মনে করি।
এখন কথা হচ্ছে, জ্বীনের বিষয়ে জ্ঞান অর্জন; এবং দাওয়াত ও তাবলীগের এ কাজে ও জ্বীনদের বিভিন্নমূখী ন্যায্য অধিকার আদায়ে আমাকে হয়তোবা দেশীয় আদালত ও আন্তর্জাতিক আদালতের শরণাপর্ন হওয়ার এবং বিভিন্নমূখী কার্য পরিচালনার প্রয়োজন হতে পারে। যা মানুষের সহযোগিতা ছাড়া আমি কিছুতেই পারবো বলে মনে হয় না।
তাই জ্বীনকে ওপেন করার বিষয়ে এবং জ্বীনের সাথে বিভিন্ন দ্বীনী কাজে আমাকে সহযোগিতা করার বিষয়ে ইসলামি শিক্ষা ও হুকুম কী হবে বা হতে পারে; এ বিষয়ে দেশ ও বিশ্বের মুসলমানদের নিকট ব্যক্ত করলে, তা হয়তো ভবিষ্যতে আমার এ ধরনের কার্য পরিচালনায় সহায়ক হবে বলে মনে করি। অতএব এ বিষয়ে ফতোয়াগত ভাবে সকলের উদ্দেশ্যে কিছু নছিহত করার জন্য বিনীত অনুরোধ করছি।
১৪। পৃথিবীর মানুষদের মধ্যে একদল মানুষ, আরেক দলের উপর জুলুম, নিপীড়ন, হত্যা, অবৈধ দখল ইত্যাদির মাধ্যমে যদি কোন দেশের মুসলিমদের সীমাহীন কষ্ট দেয়; তাহলে ভালো জ্বীনেরা মজলুমের পক্ষে বা আমাকে নেতা মেনে ও আমার নেতৃত্বে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ (যেমন ইসরাইল ও তার দোসরদের উচ্ছেদ); যারা নিরঅপরাধ মুসলমানদের হত্যা করছে, তাদেরকে উপযুক্ত শাস্তি প্রদান অথবা পৃথিবীতে আল্লাহু তায়া'লার আইনের বাস্তবায়ন; ইত্যাদি জেহাদ ও দাওয়াত মূলক কাজে অংশ গ্রহণ করে সাফল্যের পথে প্রচেষ্টা চালাতে, মানে জেহাদ করতে পারবে কিনা?
১৫। দাস-দাসী নিয়োগ, এটি ইসলামে বৈধ। এটি আল কোরআনে উল্লেখিত একটি আইন। সুতরাং, দাসীদের বিষয়ে নিম্নে যেভাবে আমার বা আমাদের সার্ভিস রুলস উল্লেখ করা হয়েছে (১৬ নং প্রশ্নের শেষে উল্লেখিত), সেভাবে (মানে আমাদের সার্ভিস রুলস অনুযায়ী) আমার ব্যক্তিগত ও কর্মক্ষেত্রের প্রয়োজনে, আমার কর্মচারীদেরকে দাসী হিসেবে নিয়োগ দেয়া যাবে কিনা? না গেলে কেন দেয়া যাবে না? আপনারা যদি বলেন, দাসীদের প্রচলন বর্তমানে নাই; তাহলে আমি বলবো, আমিতো প্রচলন করতে চাচ্ছি; কিন্তু পারবো না কেন? দাস-দাসী প্রথা কি আসলে খারাপ? তাহলে কোরআন যদি সর্বোত্তম হয়, তবে এ রকম একটি খারাপ আইন কোরআনে স্থান পাবে কেন? তাহলে স্পষ্টই বোঝা গেল, এ প্রথাটি আসলে খারাপ ছিলো না, যেহেতু এটি কোরআনে স্থান পেয়েছে; আর মানুষের শয়তানী কারেক্টারই প্রথাটিকে খারাপ বলে প্রতিষ্ঠিত করেছে। আর যদি বলেন, আইনটি বাতিল হয়ে গেছে, তাহলে দয়া করে বলবেন, কোন্ আয়াতের আইন দ্বারা, বা কোন্ হাদীসের আইন দ্বারা বা অন্য কোন্ সূত্রে আইনটি বাতিল করা হলো? দয়া করে আয়াতটি বা এ সম্পর্কিত হাদীস থাকলে সেটি উল্লেখ করে তা বুঝিয়ে লিখবেন। অথবা কার আইন দ্বারা আইনটিকে নিষ্ক্রিয় করা হলো, এবং ইসলামে এ নিষ্ক্রীয়তার বৈধতা কী তা জানাবেন? আর যদি বলেন, আইনটি এখনো বলবৎ রয়েছে; তাহলে দয়া করে বলবেন; যদি আইনটি সচলই থাকে, তাহলে আমার ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও কর্মক্ষেত্রের প্রয়োজনে আমি দাস-দাসী প্রকৃতির এ ধরনের লাইফ ওয়ার্কার নিয়োগ দিতে পারবো না কেন? এবং যদি এ প্রকৃতির কর্মকর্তা-কর্মচারী, দাস-দাসী হিসেবে নিয়োগ আমি দিতে পারবো বলে আমায় ফতোয়া প্রদান করেন, তাহলে নিম্নে আমি যেভাবে দাসীদের জন্য, রুলস এন্ড রেজুলেশন তৈরী করেছি, তা মনোযোগ সহকারে পড়ে, এ অনুযায়ী দাস-দাসী নিয়োগ-দেয়া যাবে কিনা(?); অর্থাৎ দাসী নিয়োগের বিষয়ে আমাদের নিজেদের এ সার্ভিস রুলসটি ঠিক আছে কিনা?; এ বিষয়ে সার্টিফাই করার ও এ বিষয়ে আমাকে পরামর্শ দেয়ার জন্য অনুরোধ করছি। এবং পবিত্র কোরআনের শান ও মান, অক্ষুন্ন রাখতে; এ জাতীয় নারীদের জন্যে, বা সাধারণ নারীদের জন্যেও আমাদের তৈরী এ রুলস এন্ড রেজুলেশনটি কি দাস-দাসী, এ প্রথার ও এ পদবী ধারীদের মান উন্নয়নকল্পে কোন ভূমিকা রাখবে বলে বা আলকোরআনের মর্যাদা অক্ষুন্ন রাখতে বা একটি মডেল হিসেবে উপস্থাপন করতে যথার্থ হবে বলে আপনারা কি তা মনে করেন না!?
১৬। দাসীদেরকে তথা তাদের শ্রমকে ক্রয় করতে; মানুষের বিষয়ে আমি আদালত কর্তৃক এফিডেভিটের নিয়ম উল্লেখ করেছি (আমার রুলস এন্ড রেজুলেশনের মধ্যে উল্লেখিত)। এখন যদি দাসী জ্বীন হয়, তবে তাকে, মানে তার টোটাল সার্ভিস মূল্য ক্রয় করতে কী নিয়ম বলবৎ করা যেতে পারে? তাদের ক্ষেত্রেও কি মনূষ্য আদালত কর্তৃক এফিডেবিটের নিয়মটিই বহাল থাকবে(?), না তার বা তাদের পিতা মাতা সহ মৌখিক বা লিখিত স্বাক্ষ্য হলেই হবে? অথবা এ ক্ষেত্রে কী ব্যবস্থা নেয়া উপযুক্ত ও উত্তম হতে পারে? দয়া করে পরামর্শ দিয়ে ধন্য করবেন।
নিম্নে ব্যক্তিগত ভাবে আমার প্রতিষ্ঠানের পারম্যানেন্ট কর্মী হিসেবে ক্রয়কৃত (শ্রম) দাসীদের জন্য তৈরী করা সংক্ষিপ্ত সার্ভিস রুলস ও রেজুলেশন উল্লেখ করা হলোঃ
যেহেতু লাইফ ওয়ার্কার হিসেবে এ স্থায়ী কর্মটি অনেকটা বিয়ের অনুরূপ, তাই বিয়ের কাবিন নামা রেজিস্ট্রেশনের মতো; প্রার্থীর লিখিত, মৌখিক ও স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর; প্রার্থীর অভিভাবকের না-দাবী বা প্রার্থীর উপর তার স্বত্ত্ব ত্যাগ করে মালিককে অভিভাবকত্ব প্রদানের অধিকার ও প্রার্থীর আমরণ তার জীবন পরিচালনার দায়িত্ব অর্পণ সম্বলিত আদালত কর্তৃক এফিডেভিট করা ব্যতিত কোন প্রার্থীকেই দাসী প্রকৃতির লাইফ ওয়ার্কার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হবে না। এ এফিডেভিট সনদটি বিয়ের কাবিননামার অনুরূপ বিবেচিত হবে। প্রথম কথা হচ্ছে, যারা দাসী প্রকৃতির লাইফ ওয়ার্কার হিসেবে এ ধরনের চাকুরীতে আবেদন করতে পারবে; তাদেরকে অবশ্যই গরীব ও অভাবী; কিন্তু মেধাবী ও আল্লাহ ওয়ালা হতে হবে; কোন ধনী পরিবারের সন্তান এ পদে আবেদন করতে পারবে না। আবার এ পদে ইয়াতিম, মজলুম ও নওমুসলিমদেরকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হবে। যেহেতু পর্দা মান্য করা ইসলামে ফরজ এবং নারী জাতির সম্মান ও নিরাপত্তার হাতিয়ার, তাই দাসীগণ, বিশেষ প্রয়োজনে তাদের ঘর বা কর্ম এরিয়ার বাইরে দোকান, বাজার, মার্কেট ইত্যাদিতে যেতে অবশ্যই ইসলামের পর্দার বিধান পরিপূর্ণ ভাবে মান্য করে, যেমন হাতে পায়ে মৌজা, চোখে চশমা এবং গায়ে বোরখা, এভাবে আপাদ মস্তক ঢেকে বের হতে হবে। এবং ব্যক্তিগত বা প্রাতিষ্ঠানিক কাজে যদি একান্তই দূরে কোথাও যাওয়ার দরকার হয়; তাহলে মাহরাম কোন পুরুষের সাথে মালিকের অনুমতিক্রমে অথবা মালিকের সাথে বাইরে যেতে পারবে। আমার নিকট বা আমার প্রতিষ্ঠানে দাসী হিসেবে কোন নারীর নিয়োগ প্রাপ্তির পর, তার অন্য কোথাও বিয়ে হওয়া এবং মালিক ব্যতিত অন্য কোন ছেলের সাথে প্রেমের বা বন্ধুত্বের সম্পর্ক রাখা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে। এবং পূর্বে বা আবেদনের সময় কারো সাথে এ ধরনের সম্পর্ক থেকে থাকলে; তাহলে সে এ পদে আবেদনের অযোগ্য হবে। ইনশা'আল্লাহ আমাদের সবগুলো প্রতিষ্ঠানের মহিলা বিভাগ থাকবে সুরক্ষিত। যেখানে পুরুষদের প্রবেশাধীকার নিষিদ্ধ থাকবে। এবং যাদের সাথে বিয়ে নিষিদ্ধ হবে, এ রকম কেউ পূর্ব থেকেই মালিকের লাইফ ওয়ার্কার হিসেবে কর্মরত থাকলে, তাহলে এ সম্পর্কগুলোর মধ্যে কোন মহিলা দাসী হিসেবে চাকুরীর আবেদন করতে পারবেন না। (এখানে মালিককে স্বামীর সাথে তুলনা করতে হবে)। প্রত্যেক দাসীকে তাদের নির্দিষ্ট কর্মের বিষয়ে দৈনিক ৬ ঘন্টা করে সিপ্টিং ডিউটি করতে হবে। কমপক্ষে সপ্তাহে ১ দিন ফুলডে সাপ্তাহিক ছুটি থাকবে এবং তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী মাসে ৩ দিন সি এল ছুটি ভোগ করবে। প্রতি ২ বছরে একবার ৩০ দিনের জন্য উৎসব ছুটি ভোগ করবে। যা দাসীগণ সিপ্টিং ভাবে প্রাপ্ত হবে। এছাড়া শরীরিক অসুস্থতার কারণে তার উপরস্থ দাসীর নিকট থেকে বা মালিকের নিকট থেকে ছুটি নিতে পারবে। সন্তান জন্ম দেয়াকে প্রত্যেক দাসীর জন্য অতি উচ্চ মর্যাদাকর ও সংশ্লিষ্ট দাসীর জন্য এটি অতি সম্মান হিসেবে বিবেচনা করা হবে। তাই সকল সন্তানের ক্ষেত্রে সন্তান ভূমিস্ট হওয়ার পর উপহার হিসেবে ১ মাসের সম পরিমাণ বেতন সন্তানের মা হিসেবে প্রাপ্ত হবে। মনে রাখতে হবে বাবা হওয়ার মূল উদ্দেশ্য নিয়েই মালিক এ প্রতিষ্ঠানে তাদেরকে চাকুরী দিয়েছে। মালিক যদি কোন এক সময় যৌন সম্পর্ক স্থাপনে অক্ষম হন, তাহলে দাসী হিসেবে কাউকে তিনি আর এ ধরনের চাকুরীতে নিয়োগ দিতে পারবেন না। তেমনি ভাবে দাসীদেরও যাদের সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা নেই এবং যে সব দাসী মা হিসেবে সন্তানকে ইসলামী শিক্ষায় শিক্ষিত করার যোগ্যতা রাখেন না, তাদেরকে অত্র প্রতিষ্ঠানে এ মালিকের অধীনে চাকুরী দেয়া হবে না (নওমুসলিমগণ ব্যতিত)। এ ধরনের কোন প্রার্থীকে এ প্রতিষ্ঠানে চাকুরীর আবেদনের প্রয়োজন নাই। সন্তান ছেলে হোক, কিংবা মেয়ে হোক; উভয়কেই সমান গুরুত্ব দেয়া হবে বা মূল্যায়ন করা হবে। ১৮ বছরের নিচে কোন মেয়ে বা স্বাস্থ্যহীনা কোন নারী বা যারা ইসলামী জ্ঞান রাখেন না ও ইসলাম অনুযায়ী জীবন-যাপন করতে অভ্যস্ত নন, তারা এ প্রতিষ্ঠানে দাসী হিসেবে মনোনিত হবেন না (নব মুসলিম ব্যতিত)। প্রার্থী নিয়োগ বাছাই পরীক্ষার সময়, পরীক্ষা কেন্দ্র পর্যন্ত প্রার্থীগণকে বোরখা পরিধান করে, শরিয়ত অনুযায়ী পূর্ণ পর্দার বিধান মেনে আসতে হবে; কিন্তু পরীক্ষা হলে আসার পর, বোরখা, মৌজা ও ঘোমট খুলে নিজ ব্যাগে রাখতে হবে এবং তখন নিজের পারফরমেন্স ও সৌন্দর্য প্রদর্শন করে প্রাথমিক বাছাই, লিখিত, মৌখিক ও স্বাস্থ্যগত পরীক্ষা দিতে হবে। পরীক্ষা শেষে পুনরায় বোরখা, মৌজা ও ঘোমট পরিধান করে বাসায় যেতে হবে। পরীক্ষার সময় মালিক ব্যতিত কোন পূরুষ মানুষ, পরীক্ষা এরিয়ায় থাকবে না। পরীক্ষা এবং চাকুরীর ক্ষেত্রে যেসব বিষয়কে মূল্যায়ন করা হবে, তা হচ্ছে, ১। পরহেজগারিতা ২। ধর্মীয় জ্ঞান কী রকম রয়েছে ৩। স্বাস্থ্যগত স্ট্যাকচার ও রূপ-সৌন্দর্য কী রকম ৪। মালিকের প্রতি আনুগত্য ও বিনয় কী রকম হতে পারে ৫। মানুষ, জ্বীন ও সৃষ্টিকূলের প্রতি প্রার্থীর প্রেম, ভালোবাসা, ক্ষমা, দয়া, মায়া; এ গুণগুলো তার কী রকম বা কত বেশি আছে বা থাকতে পারে ৬। মানুষ, জ্বীন ও সৃষ্টিকূলের প্রতি প্রার্থীর হক, না হক বিষয়ে তার মন-মানসিকতা ও বুঝ ব্যবস্থা কী রকম হতে পারে ৭। কাজের প্রতি আগ্রহ কী রকম বা কত বেশি রয়েছে ৮। তার অভাব কী রকম বা কত বেশি রয়েছে ৯। প্রার্থী ইয়াতিম বা অত্যচারিত বা মজলুম কিনা ১০। প্রার্থীর যোগ্যতা কী এবং ১১। বিভাগীয় বা পেশাগত জ্ঞান কী রকম রয়েছে। ইত্যাদি। যেহেতু নির্দিষ্ট কাজের পাশাপাশি মালিকের প্রয়োজন যথাযোগ্য, উপযুক্ত ও নেককার ছেলেমেয়ে। দাসী পদের নিয়োগ পরীক্ষার পর মনোনীত বা উত্তীর্ণ প্রার্থীদের কর্ম সংস্থানে আসার এবং প্রতি ২ বছর পর ছুটিতে বাড়ি যাওয়ার ও পুনরায় কর্ম সংস্থানে আসার সম্পূর্ণ ভাড়ার টাকা মালিক বহন করবে (প্রত্যেক বার); আবার কর্ম সংস্থান থেকে তাদের বাড়ি যদি ভিন্ন দেশে হয়; তবে কর্ম সংস্থানে আসার ও প্রতি ২ বছরে একবার ছুটিতে বাড়ি যাওয়ার, ও পুনরায় কর্মসংস্থানে যাওয়ার (প্রতিবার) ভিসা, পাসপোর্ট, ও বিমান টিকেট সহ যাবতীয় ভাড়ার টাকা মালিক বহন করবে। যেহেতু নির্দিষ্ট কর্মের পর, দাসীদের প্রতি মালিকের মূল প্রয়োজন উপযুক্ত ও যোগ্য সন্তান উপহার দেয়া; আর উপযুক্ত ও যোগ্য সন্তানের মূল হচ্ছে একজন যথাযোগ্য মা; তাই দাসী পোস্টে আবেদন করতে হলে, অবশ্যই দাসীকে ১৮ থেকে ২০ বছর বয়সের মধ্যে হতে হবে (যেহেতু তাকে সন্তান মানুষ করতে হবে); এবং তাদের উচ্চতা হতে হবে কমপক্ষে ৫ ফুট। গায়ের রং অবশ্যই সুন্দর হতে হবে। যার একবার বিয়ে হয়ে ছাড়াছাড়ি হয়েগেছে, এ ধরনের কেউ দাসী পোস্টে আবেদন করতে পারবে না (মজলুম প্রার্থীগণ ব্যতিত)। দাসী পোস্টে আবেদন করতে হলে অবশ্যই প্রার্থীকে অবিবাহিতা হতে হবে এবং আবেদন পত্রে অবশ্যই তাদের পিতা ও মাতা উভয়ের, প্রার্থীর অভিভাবকত্ব হস্তান্তর ও চাকুরীর অনুমতি বিষয়ক সম্মতি সূচক স্বাক্ষর লাগবে। চাকুরী প্রদানের পর কারো যদি মিথ্যা তথ্য প্রদান প্রমাণিত হয়, তাহলে তাকে চাকুরী হতে সাসপেন্ড করা হবে। প্রত্যেক দাসীকে ফরহেজগার, সুন্দর সাস্থের অধীকারী ও রুপবতী এবং অবশ্যই সুন্দরী হতে হবে। দাসীদের সর্ব নিম্ন শিক্ষকতা যোগ্যতা হতে হবে উচ্চ মাধ্যমিক বা এর সমপরিমাণ। এছাড়া পদ অনুযায়ী এর অতিরিক্ত তথ্য এবং শিক্ষকতা যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা চাকুরীর বিজ্ঞাপনে অথবা আমাদের হিউম্যান রিসোর্স বিভাগ হতে জানা যাবে। প্রত্যেক দাসীর মাতৃত্বকালীন ছুটি হিসেবে ডেলিভারীর আনুমানিক ডেইটের ১ মাস আগ থেকে ডেলিভারীর ২ মাস পর পর্যন্ত মোট ৩ মাস পূর্ণ বেতনে ছুটি থাকবে। এছাড়া দেয়া হবে সন্তান প্রতি পালনের বিশেষ সুবিধাদি। আবার মার্তৃত্বকালীন যদি সিজারিয়ান অপারেশনের প্রয়োজন হয়, তবে এর পূর্ণ খরচ, বাচ্চার বাবা হিসেবে, মালিক বহন করবে। যা ঐ দাসীর শ্রমক্রয় মূল্য থেকে কর্তন করা হবে না। দুই সন্তানের মাঝে স্বাস্থ্যগত কোন রোগ না থাকলে, তবে ৩ বছরের বেশি জন্ম বিরতি করণ ব্যবস্থা নেয়া যাবে না এবং এ সব বিষয়ে মালিকের সিন্ধান্তই দাসীকে মেনে নিতে হবে। যদিও স্ত্রী এবং দাসীদের মধ্যেকার মান-সম্মান বিষয়ে ব্যবধান থাকবে; তবুও কিন্তু স্ত্রীর সন্তান এবং দাসীর সন্তান, উভয়ই মালিকের চোখে সমান বিবেচিত হবে। কারণ মালিক উভয়েরই বাবা। যেহেতু মহান রবের নিকট মালিকের একটি প্রার্থনা হচ্ছে যে, হযরত ঈমাম মাহদী (আঃ), তার বংশে আগত হবেন। আর হযরত ঈমাম মাহদী (আঃ) আগত হতে পারেন, সৈয়দ বংশে। মানে হযরত ফাতেমা (রাঃ) এঁর বংশে। তাই দাসী পোস্টে আবেদন করতে হলে, অবশ্যই প্রার্থীর নামের পূর্বে সৈয়দ এ শব্দটি থাকতে হবে, মানে দাসীকে সৈয়দ বংশের হতে হবে। আবার যেহেতু এ বংশের মানুষগণ মক্কা বা মদীনা বা পুরো সৌদি আরবেই বেশি থাকতে পারে; তাই মক্কা কিংবা মদীনা বা সৌদি আরবের যে কোন স্থানের, যদি কোন প্রার্থীর আবেদন আসে, তবে তাকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে। এছাড়া হযরত ঈমাম মাহদী (আঃ) খোরাসান এলাকা থেকেও আসতে পারেন। তাই ইরান, আফগানিস্তান, তাজেকিস্তান এবং ইরাক; এ সকল দেশের প্রার্থীদেরকেও অগ্রাধিকার দেয়া হবে। তবে ইয়াতিম, নওমুসলিম ও মজলুম প্রার্থীর ক্ষেত্রে উপরোক্ত ২টি আইন প্রযোজ্য হবে না। আবার দাসী প্রার্থীদেরকে অবশ্যই সুন্নী মুসলিম হতে হবে। এছাড়া দাসী হিসেবে নিয়োগ দেয়ার পর কোন মালিক, শুধু শুধু, কোন লাইফ ওয়ার্কারের, চাকুরী নট করতে পারবেন না। দাসীগণকে, যেদিন তাদেরকে বরখাস্তের খবর জানানো হবে (একান্ত বাধ্য হলে), এর পরবর্তী ১২০ দিনের মধ্যে (ইদ্দত পালনকালীন সময়ে) তারা ইচ্ছে করলে, আদালতে কেইস করতে পারবেন এবং এ ব্যাপারে তার স্বাধীনতা থাকবে। আবার কোন অবস্থাতেই দাসীগণ তার ছেলে-মেয়েকে রেখে বা ছেলে মেয়ে না থাকলেও, নিজ থেকে পদত্যাগ করতে পারবেন না। কোন দাসীকে চাকুরীতে যোগদানের ১ বছরের মধ্যে গর্ভবতী না হলে, তাহলে তাকে পদত্যাগ করে চাকুরী ছেড়ে দিতে হবে। প্রয়োজনে মালিক যদি কোন অবিচার করে, তাহলে সংশ্লিষ্ট দাসী তার উপর জুলুমের বিচার চেয়ে; কেবলমাত্র আদালতের মাধ্যমে পদত্যাগ করতে পারবে। দাসীদেরকে অবশ্যই তার সন্তানদের লালন-পালন করে মানুষ করে তোলার জন্য প্রচেষ্টা চালাতে হবে এবং সম্তানদের পরিচয় ও মালিকানা থাকবে বাবা হিসেবে মালিকের। দাসীগণ তাঁর সন্তানের মা হবে। ছেলেমেয়েদের ভরণ পোষণ, খাওয়া-দাওয়া, ঔষুধ-পথ্য সহ সম্পূর্ণ দায়ভার থাকবে তাদের বাবা হিসেবে ঐ মালিকের। ছেলে-মেয়ে গণ মালিকের স্ত্রীর সন্তানের অনুরূপ বাবার সম্পত্তিতে অংশ পাবে; অর্থাৎ মীরাস পাবে। প্রত্যেক ছেলেমেয়েকে কোরআনে হাফেজ ও আলেম বানানো মূলক মাদরাসায় লেখাপড়ার বিষয়ে প্রত্যেক দাসীকে আগ্রহ ভরে রাজী থাকতে হবে এবং দূর্ভাগ্যক্রমে এ লেখাপড়া করতে অক্ষম হলে অন্য লেখাপড়ার বিষয়েও মালিকের সিদ্ধান্তের বাইরে দাসীগণ মালিককে অতিরিক্ত প্রেসার ক্রিয়েট করতে পারবে না। স্ত্রীগণকে যাদের সাথে যেভাবে পর্দার বিধান মেনে চলতে হয়, দাসীদেরকেও ঠিক সেভাবেই মেনে চলতে হবে। মালিকের অনুমতি বিহীন কোন দাসী বড় ধরনের কোন কিছুই করতে পারবেন না। দাসীদের পিতামাতা যদি থাকে, তারা যে কোন সময় দাসীদেরকে দেখতে আসতে পারবে ও তাদের সাথে থাকতে পারবে। কিন্তু অন্যান্য নিকট আত্মীয়গণ বছরে সর্বোচ্চ ৩ বার দেখতে আসতে পারবে এবং প্রতিবারে ১ দিনের বেশি থাকতে পারবে না। দাসীগণ বাৎসরিক উৎসব বিষয়ক ছুটির সময় শুধুমাত্র প্রতি ২ বছরে ১ বার, কর্মক্ষেত্রের বাহিরে মালিকের সাথে, অথবা মালিকের অনুমতিতে কোন মাহরাম পূরুষের সাথে, তাদের কোন আত্মীয় বাড়ি বা নিজ বাড়িতে যেতে পারবেন। এছাড়া আর কখনো রাত্রি যাপনের উদ্দেশ্যে কর্মক্ষেত্রের বাহিরে যেতে পারবেন না। এছাড়া ছেলে মেয়েদের এবং দাসী নিজের বড় ধরনের কোন রোগ হলে এর খরচও মালিক বহন করবে। এ খরচ সমূহও মালিক নিজ থেকে বহন করবে। দাসীদের থাকা ফ্রি থাকবে; কিন্তু খাওয়ার খরচ তার বেতন বা শ্রমমূল্য থেকে তাকে নিজকে বহন করতে হবে। দাসীদের শ্রমমজুরি প্রতিঘন্টায় কমপক্ষে ২০০ টাকা করে দেয়া হবে। তাদের সার্ভিস এইজ হবে কমপক্ষে ২০ বছর এবং শরীর সুস্থ থাকা স্বাপেক্ষে সর্বোচ্চ তাদের বয়স ৪০ বছর হওয়া পর্যন্ত তাদেরকে কর্ম করতে হবে। এ হিসেবে একজন দাসীর সর্বনিম্ন শ্রম ক্রয়মূল্য হবে ৪,০৩,২০,০০০ টাকা মাত্র। প্রতিমাসে ৭২০ ঘন্টা হিসেবে একজন দাসী প্রতি মাসে সর্বনিম্ন বেতন পাবেন, ১,৪৪,০০০ টাকা। দুই ঈদে বেতনের সমপরিমাণ ২টি ঈদ বোনাস পাবেন। মাসিক বেতনের এ টাকা সমূহ তার টোটাল শ্রম ক্রয়মূল্য থেকে বিয়োগ করা হবে। মাসিক বেতন ও ঈদ বোনাস ব্যতীত একজন দাসীকে, তার টোটাল শ্রম ক্রয়মূল্যের আর কোন টাকা অগ্রীম দেয়া হবে না। শ্রেণী, পেশা, যোগ্যতা, বংশ, ও পদবী অনুযায়ী একজন দাসীর শ্রম ঘন্টার হিসাবে তার ক্রয়মূল্য আরো অনেক অনেক বেশি হতে পারে। তবে এর চাইতে কম হবে না। আবার কোন দাসী ইচ্ছে করলে, মালিকের প্রতি সন্তুষ্ট ও খুশি হয়ে, তার শ্রম মূল্যের সম্পূর্ণ টাকা, মালিকের পরিবার ভূক্ত দাসী হিসেবে আপনজনের মতো, মালিককে মাফও করে দিতে পারেন। তবে এতে মালিককে রাজী থাকতে হবে। তখন এ ধরনের দাসীদের থাকা-খাওয়া সহ তার মৃত্যু পর্যন্ত জীবনের সকল কিছু বা সকল দায়-দায়িত্ব মালিক বহন করবে। সফল ভাবে দাসীদের কর্ম জীবন শেষ করার পর, প্রত্যেক দাসীর থাকা খাওয়া সহ জীবনের সকল দায়-দায়িত্ব মালিক বহন করবে। তখন তাদেরকে তেমন কোন কাজ দেয়া হবে না। এবং তখন তাদেরকে কোন বেতনও দেয়া হবে না; কিন্তু মালিকের সন্তানের মা হিসেবে, তার সুখময় জীবনের ব্যবস্থা করা মালিকের দায়িত্বে থাকবে। (আমৃত্যু) আসলে দাসীদের মালিক, তাদের শুধু একজন মালিক নয়; তাদের একজন, বিশ্বস্থ, উদার, অন্তরঙ্গ ও প্রকৃত বন্ধু এবং তাদের একজন অভিভাবক। যিনি অনেকটা তাদের স্বামীরই স্থালাভিসিক্ত। তবুও প্রতিষ্ঠানের নিয়ম শৃঙ্খলা ও কর্মের স্বার্থে দাসীদের অসদাচরণ বা কর্মে ফাঁকি অথবা মালিককে অমান্য বা অবমূল্যায়নের কারণে বা যে কোন অন্যায়মূলক কারণে তার উপরস্থ দাসী অথবা মালিক, তাদের কর্ম ঘন্টা অনুযায়ী তার শ্রমমূল্য কর্তন করবে। দাসীগণ নিজেরা অন্যকোন দাসী তাদের ঘরে রাখতে পারবে না। নিজের রান্না বান্না নিজকেই করে খেতে হবে। কোন দাসীকে যদি পদত্যাগ করতে হয় বা তাকে যদি বরখাস্ত করা হয়, তবে তা ঐ দাসীকে জানানো হবে এবং তখন সে গর্ভবতী হলে (আদালত কর্তৃক রায় পেয়ে পদত্যাগ করতে চাইলেও; গর্ভাবস্থায় পদত্যাগ করা যাবে না), তবে ডেলিভারী পরবর্তী কমপক্ষে ৬ মাস তার এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা যাবে না। আবার গর্ভবতী না হলে, সিদ্ধান্ত কার্যকরের আগে নিকটতম ১২০ দিন ঐ দাসীর সাথে সহবাস করা যাবে না। যখন কোন দাসীকে সাসপেন্ড করা হবে (একান্তই প্রয়োজন হলে) বা যখন কোন দাসী পদত্যাগ করবে, তখন সে, তার বিক্রয়কৃত শ্রম অর্থের বাকী টাকা সে পাবে না।
জ্বীনদের থেকে যদি কাউকে দাসী হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়, তবে তার বা তাদের বয়স এবং সন্তান জন্মদান, এ দুটি শর্ত বিবেচিত হবে না। বিশেষ করে তাদের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র মজলুম মুসলিমদেরকে জালেমের জুলুম থেকে উদ্ধার, ইসলামী রাজ্যের সীমানা পাহারা; স্থল, জল ও আকাশ প্রতিরক্ষায় সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর দায়িত্ব পালন করা, পৃথিবীতে শান্তি আনয়ন, মালিকের মনোরঞ্জন, চিত্ত বিনোদন, পৃথিবীতে আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠা, চিকিৎসা সেবা, গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার ইত্যাদি বিষয়ে তাদেরকে দায়িত্ব ও গুরুত্ব দেয়া হবে। এবং অন্যান্য শর্তের মধ্যেও কোনটি সংশ্লিষ্ট ঐ জ্বীনের থাকতে হবে, আর কোনটি থাকতে হবে না; তা শুধুমাত্র মালিক বিবেচনা করবে।
অতএব, ফতোয়া বিভাগের বিজ্ঞ বিচারক বৃন্দের নিকট বিনীত প্রার্থনা; আমার একটি স্বাক্ষাতকার নেয়ার মাধ্যমে, অথবা স্বাক্ষাতকার বিহীন হলেও উপর্যুক্ত ১৬টি প্রশ্নের প্রতি উত্তর দ্রুততম সময়ে প্রদান করে, আমার এ যন্ত্রণাময় জীবন থেকে মুক্তি দিতে, এবং ইসলাম, মানুষ ও জ্বীন সম্প্রদায়ের সেবা করার জন্য সুযোগ করে দিতে হুজুরের মর্জি কামনা করি।
নিবেদক,
আরিফ উল্যাহ চৌধুরী(সৈয়দ আরিফ উল্যাহ)
গোবিন্দপুর, হাজীর বাজার, ফেনী।
মোবাইলঃ ০১৭১৮৯৮১৩৪৪, ০১৮২২৮৫৯৯৯১.
-সমাপ্ত-
দাসী প্রথা একটি উত্তম তরীকা, কিন্তু কেন ও কখন এটি নিন্দনীয় হয়েছিলোঃ
দেখুন, আল কোরআন, এটি সর্বকালের ও সর্বযুগের জন্য। এর একটি আয়াত বা সামান্য একটি হুকুমকে ব্লক বা রহিত বা অকার্যকর করার ক্ষমতা বা অধিকার কেয়ামত পর্যন্ত কারো নেই। কিন্তু আপনি যদি বলেন, কোরআনের অমুক হুকুমটি আমলে নেয়ার কোন পরিস্থিতি বর্তমানে নেই; তাহলে উদাহরণ স্বরুপ আমি বলতে চাই যে, এভাবে যদি দশটি আয়াতের হুকুম, ভবিষ্যতের কোন এক কালে, পরিস্থিতি না থাকার কারণে, বা কূ-বুদ্ধিমান মানুষগুলো নিজেদের পছন্দমাফিক পরিস্থতি পরিবর্তনের দোহাই দিয়ে, বা অজুহাতে, কোরআনের এ শাশ্বত আইনকে অকার্যকর করে এবং এ কৌশলে অকার্যকর করার বৈধতা পায়, তবে এমন একটি মহিমাহ্নিত কিতাবের কার্যকারিতা বা কিতাবটির ক্রিয়েটিভিটি বা গ্র্যাভিটি বা এর তুল্যমান তখন কমে যায় বা কমে যাবে। তার মানে, উপমা স্বরূপ, আগে যদি এ কিতাবে ১০০টি আইন কার্যকরী ছিলো, এখন রয়েছে ৯৯টি আইন কার্যকরী; যা দ্বারা বোঝা যায় ১টি আইনের কার্যকারীতা কমে গেলো। ফলশ্রুতিতে কথার কথা আগে যদি এ কিতাবের দাম ১০০০ ডলার হতো, এখন হবে ৯০০ ডলার। এবং আগে যদি এটি প্রেস হতো, কথার কথা এখন হবে এটি ধূলাবালি ওয়ালা। আর এর জন্য বেশি দায়ী, আপনারা, মানে আলেমেরাই। তাই কোরআনের একটি আয়াতের হুকুম, বাস্তবায়নের পরিস্থিতি না থাকার মানে হচ্ছে, আয়াতটি শুধু নির্দিষ্ট কাল বা যুগের জন্য নাজিল হয়েছিলো। যা সামগ্রিক ভাবে আসলে মানুষের জন্য মন্দ ছিলো এবং এটি সর্বকালের, সর্বযুগের ও শ্বাশত নয়। কিন্তু কোরআনের কোন হুকুম শুধু নির্দিষ্ট কালের জন্য, এ কথা আপনি বলতে পারেন না; যদি না মানুষগুলো যুক্তিকরে ও মনগড়া ভাবে কোরআনে প্রদত্ত বিধানের চাইতে উত্তম কোন পরিস্থিতি সৃষ্টির বা প্রাকৃতিক ভাবেই সৃষ্ট পরিস্থিতির দোহাই দেয়, আর এ কৌশলী কারণ দেখিয়ে, কোরআনে প্রদত্ত বিধানকে তারা না মানে বা না মানতে হয় বা মানার কোন সুযোগ থাকে না। আর এর মাধ্যমে কোরআনের শুধু শ্রেষ্ঠত্বই খর্ব হয় না; কোরআনের কিছু আইন মূর্দাও হয়ে যায় বা যাচ্ছে। মনে রাখতে হবে, পৃথিবীর প্রাকৃতিক পরিবেশ ও পরিস্থিতির পরিবর্তন হতে পারে, কিন্তু কোরআনের কোন হুকুম বা বিধান নিষ্ক্রীয় হওয়ার নয়। এবং নিস্ক্রীয় হতে দেয়া যাবে না। বা হতে চাইলেও, নিষ্ক্রীয় যাতে না হয়, সে প্রচেষ্টা মুসলমানদেরকেই অব্যাহত রাখতে হবে। যেমন বৃষ্টি এলেও আমাদেরকে মসজিদে নামাজ চালু রাখতে হয় এবং মুসল্লিদেরকে ছাতা নিয়ে হলেও মসজিদে যেতে হয়! অর্থাৎ এঁর সমস্ত বিধান, কেয়ামত পর্যন্ত সর্বকালের জন্য সক্রীয় থাকবে এবং মানুষের জন্য কোরআনে উল্লেখিত বিধান গুলিই সর্বোত্তম হবে। এমনটি বলা যাবে না যে, আল কুরআনের এ বিধানটি এ কালের জন্য শ্রেষ্ঠ, কিন্তু পরবর্তী ঐ কালের জন্য শ্রেষ্ঠ নয় বা হতে পারে না। আর তাই কোরআনের সমস্ত আইন সর্ব কালের জন্য সক্রীয় রাখার এ দায়িত্ব আমাদের, মানে মুসলমানদের!
দাসীদের সাথে মালিকের যৌন সম্পর্ক স্থাপন এমনই একটি কোরআনের আইন। প্রথম বারে শুনতেই আমাদের কাছে মনে হয়, হ্যা-রে কত খারাপ! মানুষ বেচা-বিক্রী! এ তো স্পষ্ট বর্বরতা!!
প্রিয় ভায়েরা আসলে কিন্তু তা নয়! বরং আমাদের বুঝের ভূল! ও নৈতিক এবং ঈমানের অবক্ষয়ের কারণেই হয়তো আমাদের কাছে এমনটি মনে হচ্ছে! এখনকার সময়ে যেমন, কেউ একজন কোন ব্যবসায়িক বা কৃষিজ খামার বা যে কোন প্রতিষ্ঠান দিলে প্রয়োজন হয় কর্মকর্তা-কর্মচারীর, ঠিক তেমনি তখনকার সময়ে কেউ একজন এ ধরনের প্রতিষ্ঠান দিলে প্রয়োজন হতো শ্রমিকের; মানে দাস-দাসীর। যেহেতু তখনকার সময়ে হয়তো চুক্তিভিত্তিক শ্রমক্রয় প্রকৃতির বর্তমানকার চাকুরীর এ নিয়ম ছিলো না। তাই তখনকার মালিকগণ হয়তো কাজ-কাম করাতোই এভাবে। আসলে, তারা যেহেতু সারা জীবনের জন্য কোন মালিকের কাজের লোক ছিলো; তাই সমাজ ও দেশে তাদেরকে এমন ভাবে হেয় করা হতো যে, তাদের সম্মান বলতে কিছু থাকতো না। আর তাই আজ আমরা দাস-দাসী, এ দু'টি শব্দ শুনলেই অপমানবোধ করি।
দাস-দাসী ক্রয়-বিক্রয় কি আসলে মানুষ ক্রয়-বিক্রয়? মানুষ সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ও তাঁর সাহাবীগণ কি দাস-দাসীদেরকে এতোই কষ্ট দিয়েছিলেন? মোটেই না। তাহলে, পরবর্তীকালে এ বিষয়ে, মানুষ ক্রয়-বিক্রয়ের প্রশ্ন আসবে কেন? এটা হচ্ছে মানুষের কর্মের বিনিময়ে অর্থ প্রদান; মানে মানুষের কর্ম বা শ্রমকে ক্রয় বা শ্রম ক্রয়ের উচিলায় কাউকে হেফাজতের একটি কৌশলী তরীকা। অনেকটা বর্তমানে যারা ডেইলি বা মাসিক বেতনে কাজ করে তাদের মতো। তবে দাস-দাসীদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত যোগ হয়, দাস-দাসীদের জীবনের সর্ব বিষয়ের আমরণ দায়িত্ব নেয় তাদের মালিকেরা এবং দাস-দাসীদের কর্মের পিরিয়ড়ও তাদের সাধ্য অনুযায়ী অনেকটা মালিকের প্রয়োজন বা তার ইচ্ছা অনুযায়ী হয়। আর তাই আমি ব্যক্তিগত ভাবে আমার পরিবার ও প্রতিষ্ঠান সমূহে তাদের সার্ভিস বা কর্মকে চাকুরী হিসেবেই উল্লেখ করবো এবং যে চাকুরীর প্রকৃতিগত অবস্থা হবে দাস-দাসী বা লাইফ ওয়ার্কার বা প্রতিষ্ঠানের স্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারী বা কর্মী। অবশ্য আমি বর্তমান নিয়ম অনুযায়ীও কর্মী নিয়োগ দিবো। যার প্রকৃতিগত অবস্থা হবে, 'দায়হীন চুক্তিভিত্তিক কর্মী'। আমার এ প্রশ্নপত্রে এবং আমার ব্যক্তিগত ও কর্মজীবনের প্রয়োজনে নিয়োগকৃত দাস-দাসীদেরকে উভয় লিঙ্গ হিসেবে এর আধুনিক পরিভাষায় মাঝে মাঝে তাদেরকে আমি "লাইফ ওয়ার্কার" এ নামে উল্লেখ করবো। আমার মতে এ আইনের মাধ্যমে আজো পৃথিবী জুড়ে বিলিয়ন বিলিয়ন মহিলা উপকৃত হতে পারে।
আসলে আমায় আসর বা সাহর করা এ জ্বীন বা জ্বীন সম্প্রদায় আমাকে তরল ধন রত্ন দিয়ে অথবা রোগী দেখা, অথবা অন্য যে কোন উপায়ে, হয়তো আমাকে অনেক অনেক ধনী করে ফেলতে পারে; এবং আমার সাথে থাকা এ জ্বীন বা পরী সম্প্রদায়কে আমার সাথে রাখার কৌশল এবং সমাজ, দেশ ও আন্তর্জাতিক ভাবে মজলুম মানুষ ও মুসলমানদের জন্য কল্যাণমূলক কিছু করার উদ্দেশ্যে ও এ বিষয়ক প্রচেষ্টার অংশ হিসাবে আপনাদের নিকট আমার এতো কিছু জানতে চাওয়া।
ভেবে দেখা দরকার, দাসীদেরকে কর্ম দেয়ার সাথে সাথে তাদের জীবনের দায়িত্ব নেয়া; এটাতো উত্তম হওয়ার কথা, এটা মন্দ হবে কেন? কোন অসহায় লোককে বা ইনকামের বা কর্মের প্রয়োজন, এ রকম ব্যক্তিকে কর্ম দেয়ার পর তার থাকা, খাওয়া, পোশাক পরিচ্ছেদ, রোগ জীবানু, তার যে কোন সমস্যায় তার সারা জীবনের অভিভাবকত্ব করা; এটা কেন খারাপ হবে? আসলে খারাপির বিষয়টি এ প্রথার মধ্যে নয়; এটি হচ্ছে মালিকদের শয়তানি কারেকটারের মধ্যে। মালিকগণ দাস-দাসীদের সাথে একদিকে যেমন অমানবিক আচরণ করা শুরু করলেন, ঠিক তেমনি তাদের জীবনের দায়িত্ব নিতেও চাইলেন না। তাহলে কারো কারেক্টার খারাপ হওয়ার কারণে, প্রথা বা নিয়মটি কেন খারাপ হবে? দাস-দাসীদের উপর অত্যাচারের কারণে মানুষগুলো বুঝে নিয়েছে বা হয়তো অত্যচার ও নিপিড়ন, অথবা অসম্মান এতোই মশহুর হয়েছিলো যে, যা অনেকটা ন্যাচারালি হয়েগিয়েছিলো। যেমন ধরুন, শিশু দাসদের তখন, পুরুষাঙ্গ কেটে খোজা করে ফেলা হতো। এতে অনেকেই মারা যেতো। ২/১ জন বেঁচে থাকলে, তার আর বিয়ে সাদীর প্রয়োজন হতো না। এবং এভাবে এদেরকে দিয়ে সারাজীবন অমানষিক কাজ আদায় করে নিতো। ফলে মানুষেরা অটো ভাবে বোজা শুরু করলো এ প্রথাটি খারাপ। যেহেতু দাস-দাসী বা বাঁদী, সমাজের এ চরিত্রগুলো অত্যচারিত, অমর্যাদাকর ও অসম্মানিত বা অবহেলিত কারো নাম; তাই কালক্রমে, দাস-দাসী, এ শব্দ দু'টি শুনতেই মানুষ নিজকে ঘৃণিত বা অপমাণিতবোধ মনে করা আরম্ভ করলো। না হয়, আপনারা একটু চিন্তা করুন; কর্মের দিক থেকে একজন পূরুষের ঘর-দোর সামলে দিয়ে ও অন্যান্য পারিবারিক কাজ করে; তার স্ত্রী এতো সম্মানিত হতে পারে বা অধিকার ভোগ করতে পারে; আর দাস-দাসীগণ ঐ পুরুষেরই প্রাতিষ্ঠানিক ও কর্মক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বপালন করে কেন এতো এতো অসম্মানিত হবে? হয়তো বলতে পারেন, স্ত্রী গণ পুরুষের জীবন সঙ্গী, উচ্চ বংশের, ভদ্র, শিক্ষিত ইত্যাদি। তা আমি মানলাম; কিন্তু লাইফ ওয়ার্কারগণ পুরুষদের ব্যক্তিগত, প্রাতিষ্ঠানিক ও কর্মক্ষেত্রে পুরুষদের জীবন চালিকা শক্তি মূলক প্রয়োজনীয় কাজ করে দিয়ে এতো পঁচে যাবেন কেন? উইকিপেডিয়াতে স্পষ্ট লিখা আছে ভদ্র ও শিক্ষিত দাস-দাসীদেরকে দিয়ে সাহাবীগণ নিম্নোক্ত কাজ করাতেন-
[শিক্ষকতা ও তত্ত্বাবধান:
কিছু ক্ষেত্রে, দাস-দাসীদের শিক্ষিত করে অন্যদের শিক্ষকতা বা তত্ত্বাবধানের কাজে লাগানো হতো।
সামরিক প্রশিক্ষণ:
কিছু দাস-দাসী সামরিক প্রশিক্ষণও পেতেন এবং প্রয়োজনে যুদ্ধে অংশ নিতেন।
সম্মানজনক কাজ সাধারণত তাদেরকেই দেওয়া হতো যারা বিশ্বস্ত, শিক্ষিত বা বিশেষ কোনো দক্ষতাসম্পন্ন ছিলেন। যেমন:
শিক্ষকতা:
যারা ইসলামী জ্ঞান এবং অন্যান্য বিষয়ে পারদর্শী ছিলেন, তাদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ করা হতো।]
তাহলে সাহাবীগণ দাস-দাসীদেরকে এতো খারাপ চোখে দেখেছেন বা কষ্ট দিয়েছেন এর প্রমাণ কোথাও নেই। কিন্তু দিন যত যেতে থাকলো; দাস-দাসীদেরকে মালিকেরা শুধু ভোগ্যপণ্য হিসেবে ব্যবহার করা আরম্ভ করলো; তাদের জীবনের দায়িত্ব নিতে চাইলো না এবং বাধ্য হয়েই মানুষেরা আরম্ভ করলো বর্তমান চাকুরীর সিস্টেম।
দেখুন, একজন পূরুষের দু'টি সাইড থাকে। একটি ঘর বা একান্তই ব্যক্তিগত মহল। এবং অন্যটি হচ্ছে তার বাণিজ্যিক মহল বা কর্মক্ষেত্র। পূরুষের ঘরের পরিসর ছোট থাকবে এবং কর্মক্ষেত্র বিস্তৃত থাকবে, এটিই স্বাভাবিক। আর এ জন্যেই হয়তোবা আল্লাহু তা'য়ালা একজন পুরুষের জন্য সর্বোচ্চ ৪ বিয়ে জায়েজ করেছেন; কিন্ত দাসী কতজন রাখতে পারবেন তার কোন নির্দিষ্ট সংখ্যা দেননি। অর্থাৎ মালিকের প্রয়োজন ও সাধ্য অনুযায়ী সর্বোচ্চ যে কোন সংখ্যক রাখতে পারবে। পূরুষ যখন বিয়ে করে, তখন তার বউকে সে সারা জীবনের জন্য নিয়ে আসে এবং পূরুষ যখন একজন লাইফ ওয়ার্কার নিয়ে আসে তখন তাকেও সারা জীবনের জন্যই নিয়ে আসে। পূরুষ যখন পিতা হতে চায় বা যৌনক্ষুদা মিটাতে চায়, তখন সে যে কোন একজনের কাছে, মানে, হয় স্ত্রীর কাছে, না হয় লাইফ ওয়ার্কারেরর কাছে, যে কোন একজনের কাছে গেলেই উদ্দেশ্য সাধিত হয়। তেমনি ভাবে একজন স্ত্রী মা হতে চেয়ে বা যৌন চাহিদা মেটাতে যে পুরুষটির কাছে যায়, ঐ একই কাজে একজন দাসীও ঠিক ঐ পুরুষটির কাছেই যায়। একজন মহিলার বিয়ে হলে যেমন সারা জীবনের জন্য বাবার বাড়ি ছেড়ে দিতে হয়; তেমনি একজন দাসীকেও তার কর্মের প্রয়োজনে সারা জীবনের জন্য তার পূর্বাবস্থা ছেড়ে দিতে হয়। তাহলে স্ত্রী বললে, আপনারা শুধু সম্মান বুঝবেন, আর দাসী বললে শুধু দুনিয়া ভর, ঘৃণা আর অসম্মান বুঝবেন; এমনটি কেন? অন্যদিকে এর যুক্তি থাকলেও, এদিক দিয়েতো দাসী প্রায় স্ত্রীর মতোই! আমিতো দেখছি, মাইন্ড করবেন না, স্ত্রীর সামনে যেমন একজন পুরুষকে কাপড় খুলতে হয়, ঠিক ব্যক্তিত্ব লেস করে দাসীর সাথেও ঠিক তেমনটিই করতে হয়! স্ত্রীকে তার শান্তি, নিরাপত্তা, জীবনের সকল ব্যবস্থা এবং মাতৃত্বের মর্যাদা প্রদান করে যে পূরুষটি; ঐ পূরুষটি দাসীদেরকেওতো ঠিক একই ব্যবস্থা দিতে বাধ্য। এমনটি নয় যে, শরিয়ত অনুযায়ি স্ত্রীকে সুখ দেয়ার জন্য আনা হয়; আর দাসীকে দুঃখ দেয়ার জন্য আনা হয়! আবার এমনও নয় যে, স্ত্রীদেরকে তাদের বাবার বাড়ি বা অন্যান্য আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি যেতে দেয়া হয় বা পূর্ণ স্বাধীনতা (শরিয়তের মধ্যে থেকে) দেয়া হয়; আর দাসীদেরকে একেবারেই পরাধীন করে রাখা হয় বা তার আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে যাওয়া একেবারেই নিষেধ থাকে! এমনটিও নয় যে, স্ত্রীর বাপের বাড়ি বা অন্যান্য আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি পূরুষ মানুষটি যায়, কিন্তু দাসীর কোন আত্মীয় বাড়ি থাকলে ঐ পূরুষটির সেখানে যাওয়া নিষেধ থাকে। দাসীর সাথে তার মালিকের সম্পর্ক কর্মের সাথে হওয়ায় হয়তো বিষয়গুলো সীমিত থাকে। আপনি চিন্তা করুন একটা লোয়ার রেংকের শিশু বা মহিলা, যার হয়তো তেমন কিছুই নেই, বা একজন কর্মী, শুধু দাসী হওয়ার সুবাধে সে প্রায় স্ত্রীর মতো সুবিধাদি ভোগ করছে এবং তার কর্মের রেংক অনুযায়ী সম্মানও পাচ্ছে! যৌন চাহিদা বা বাবা হওয়ার ইচ্ছা কি শুধু পুরুষের থাকে (?), মহিলা বা দাসীর থাকে না? একজন মহিলা বা দাসী কি মা হতে চায় না? দুনিয়াতে তার তেমন কেউ বা কিছু নাই; অথবা তার কর্মের প্রয়োজন বিধায়তো সে দাসী; অথচ একজন পুরুষ তার গার্ডিয়ান হয়ে এতো কিছু দিচ্ছে? তাকে ২/৪টি সন্তান উপহার দিয়ে তাকে সাবলম্বী করার চেষ্টা করছে (বেড় মাইন্ড না করলে বিষয়টি বুঝবেন)। তাহলে আপনারা দাসীদের সাথে যৌন সম্পর্কের এ বিষয়টিকে এতো খারাপ চোখে দেখবেন কেন? একটা অসহায় মানুষকে এতো কিছু দেয়ার প্রথা বা নিয়মটি খারাপ হবে কেন? একজন দাসী কাজ করবে মালিকের, কিন্তু মা হবে কোথায়? যৌনক্ষুদা মিটাবে কোথায়? ঠিক তেমনি একজন পুরুষের সামনে, কোন মহিলা তার কর্মচারী ও লাইফ ওয়ার্কার হিসেবে পর্দা বিহীন দিন রাত কাজ করবে, এটা কিভাবে? এ অবস্থায় যৌন সম্পর্কের বৈধতা না থাকলে, এ ধরনের মহিলাদেরকে আশ্রয় দেয়া বা তার জীবনের দায়িত্ব নেয়া; এটা কি কোন পুরুষ কিংবা মহিলার, কারো দ্বারা সম্ভব হতে পারে?
আবার দেখুন, একজন পূরুষ, মৃত্যুর পর যা পায়, তার অন্যতম হচ্ছে, নেক সন্তান। সুতরাং মৃত্যুকালে যার বেশি নেক সন্তান থাকবে, সেতো কামিয়াব হওয়ার কথা! সে মানুষের কাছ থেকে সাধুবাদ পাওয়ার কথা! কিন্ত সে রবের কাছ থেকে এ পুরষ্কারটি পাওয়ার জন্য এবং কোরআনের একটি মুর্দা আইনকে (দাসীদের সাথে যৌন সম্পর্কের বৈধতা) জিন্দা করার প্রসেস করে, মানুষের নিকট নিন্দনীয় হবে কেন? আবার রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, হাশরের ময়দানে, তাঁর উম্মতের সংখ্যা বেশি হবে (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬৫৪১), তাহলে বুঝতে পারা যায়, যার বেশি সন্তান রয়েছে, তার উপর রাসূলুল্লাহ (সাঃ) খুশি থাকবেন এবং তিনি (সাঃ) নিজেও একাধিক বিয়ে করেছিলেন। তাহলে বেশি সন্তান সন্ততির জন্য ফিকির করা, এটা দোষণীয় হবে কেন?
এবার চিন্তা করা যাক একজন পূরুষ কেন দাসীদের দায়িত্ব বহন করে। যৌন সম্পর্ক এবং মার্তৃত্ব ও পির্তৃত্বের সম্পর্কের বিষয়টি বাদ দিলে, দাসীদের সাথে তার মালিকের সম্পর্ক থাকে শুধু কর্মের। পৃথিবীতে বর্তমানে মহিলাদের যে কর্মক্ষেত্র, এতে কি মহিলারা নিরাপদ!? অনেকটাই না। কিন্তু একজন পুরুষ তার দাসীদের দায়িত্ব নিয়ে তাদের মাধ্যমে যখন কোন ইন্ডাষ্ট্রি বা ফার্ম পরিচালনা করে; তখন যেহেতু সকল দাসীর সমস্ত দায়-দায়িত্ব তাদের মালিকের; এখানে তারা একজন অভিভাবক বা আপনজন পাবে; সুতরাং তারা অনিরাপদ হবে কিভাবে? এবং যার ফলে মহিলাদের জন্য আলাদা করে কোন বিভাগ চালানো, অনেকটাই সহজ হবে ঐ পুরুষটির জন্য। আসুন কর্মক্ষেত্রে আমরা একজন চাকুরীজীবী মহিলা এবং একজন দাসী মহিলার তুলনা করি। এতে প্রথমেই আপনাকে বুঝতে হবে সমাজ ও দেশে যে সব মহিলার কর্মের প্রয়োজন অথবা যারা অবহেলিত, যারা ঠিক মতো খাওয়া পরা পাচ্ছে না, যাদের কোন অভিভাবক নেই, মাথার উপর কোন ছায়া বা ছাতা নেই; তারাই সাধারণত কোন মালিকের কর্ম নেয় এবং ঐ মালিকের দাসী বা বাঁদী হয়। অতএব স্ত্রীর মতো, তার মালিক বা বস যে তার সম্পূর্ণ জীবনের দায়িত্ব নিয়েছে; এটিইতো তার জন্য সৌভাগ্য।
দাসীগণ মূলত মালিকের পারমেন্যান্ট ওয়ার্কার। কর্মক্ষেত্রে একজন কর্মজীবী মহিলার যদি কোন জটিল ও কঠিন রোগ জীবানু বা কোন সমস্যা হয়, তাহলে সে ক্ষেত্রে একজন কর্মজীবী মহিলা এর পূর্ণ প্রিভেন্টিং তার কর্তৃপক্ষ বহন করে না; শুধুমাত্র প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট বা রুলস অনুযায়ী কিছু প্রিভেন্টিং সে পেতে পারে। পক্ষান্তরে একজন পারম্যানেন্ট ওয়ার্কার বা দাসীর কর্মস্থানের যে কোন সমস্যার সমাধান তার মালিক বা মুনিব, তাকে দিতে বাধ্য। আবার কর্মস্থানের বাহিরে বাসা-বাড়িতে বা অন্য যে কোথাও উদ্ভূত সমস্যার কোন সমাধান, একজন চাকুরীজীবী মহিলার চাকুরে কর্তৃপক্ষ দেয় না; যেখানে একজন দাসীর যে কোন সময়ের যে কোন সমাধান তার মালিককে দিতে হয়। আবার একজন চাকুরেজীবী মহিলা যা বেতন পায়, এ দিয়ে হয়তো তার জীবন ঠিক মতো চলে না; এদের মুখে অনেক সময়ই শুনতে পাওয়া যায়; যা বেতন পাই, তা দিয়ে সংসার চালাতে পারি না ঠিক মতো। চাল আনিতো মাছ আনতে পারি না; মাছ আনতে গেলে চালের টাকা থাকে না, ইত্যাদি। অথচ একজন পারম্যানেন্ট দাসীর এসবের চিন্তা করার প্রয়োজন পড়ে না। হাদীস অনুযায়ী মালিক যা খায়; দাসীকেও ঠিক তাই খাওয়াতে হয়। অথবা অন্তত একটা ভদ্র থাকা খাওয়াতো দাসীদেরকে দিতে হয়। অন্যদিকে ৬০ বা ৭০ বছর পর যখন একজন চাকুরীজীবী মহিলা চাকুরী হতে অব্যাহতি নেয়; তখন তার বৃদ্ধ বয়সের দায়িত্ব কোন চাকুরীদাতাই বহন করে না; কিন্তু একজন মালিককে তার স্ত্রীর মতো দাসীদের আমরণ দায়িত্ব নিতে হয়। তাহলে কোন দিক দিয়ে দাসী প্রথাটি খারাপ? এখনো কোন মুসলমান যদি মুসলমানের মতো হয়, তাহলে তিনি অনেকগুলো শিশু ও মহিলাদেরকে দাসী হিসেবে দায়িত্ব নিলে, তবে তা ঐ শিশু ও মহিলাদের জন্য অবশ্যই অনেক উত্তম হবে। এবং তা দেশ ও বিশ্বের জন্য মঙ্গলও হতে পারে। কারণ এমনও হতে পারে যে, পৃথিবীর ভবিষ্যত প্রজন্মে মহিলার সংখ্যা পুরুষের চাইতে বেশি হতে পারে এবং তারা দূর্বল শ্রেণী হওয়ায়, তাদেরকে পূরুষদের অধীনে বা তাদের নিকট আশ্রয় বা বেঁচে থাকার অবস্থান দেয়ার প্রয়োজনও হতে পারে।
মূলত মানুষ ও মুসলমানদের মধ্যে যখন চারিত্রিক দূর্বলতা বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয় বা হয়েছিলো, তখনই আমার মনে হয়, মানুষ গুলো, পরিস্থিতি পরিবর্তনের ধ্বজা তুলে বা মিথ্যা যুক্তি তুলে, পবিত্র কোরআনের এ আইনকে অকার্যকর বা অপ্রয়োজনীয় করে। কিন্ত কোরআন সর্বকালের। এ কিতাবে কোন কাল বা যুগের জন্য যদি অপ্রয়োজনীয় আইনই থাকে, তবে এটি সর্ব কালের কিতাব কিভাবে হলো!? তাহলেতো এটি অকার্যকর ও পঁচা আইনের কিতাবের মতো হয়ে গেলো না!
আসলে মুসলমানদের কেন মাথায় ধরে না যে, আল কোরআন এটি কোন সাধারণ কিতাব নয়। এটি মহান রবের পক্ষ থেকে মানুষের জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় বিধানাবলীর কিতাব। এতে কোন সন্দেহ নেই যে, এ কিতাবে যে আইন সমূহ স্থান পেয়েছে, এর সবগুলো আইনই মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় এবং এগুলো বাদ দিয়ে মানুষের জীবন পরিপূর্ণ হওয়ার বা মানুষ পরিপূর্ণ শান্তিতে থাকার কোন যুক্তিই নেই। তাহলে নিঃসন্দেহে দাসীদের সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন, এটি একটি উত্তম আইন। যদিও আপনারা অনেকে বলবেন, প্রথাটি তৎকালীন যুগে ছিলো, তাই এটি এ কিতাবে স্থান পেয়েছে; প্রথাটি আসলে মন্দ। তাহলে আমি বলবো, সর্বকালের জন্য উত্তম একটি কিতাবে মন্দ একটি বিধান সংযোজিত হলে, তাহলে কিতাবটি সর্বকালের জন্য এবং কিতাবটি মানুষের জন্য উত্তম আইনের কিতাব হতে পারে না। এবার হয়তো আপনি বলবেন, কোরআন শরীফের এক একটি আয়াতে লিখিত আইন, অন্য আয়াত দ্বারা এর কার্যকারিতা রহিত করা হয়েছে। এবার আমি বলবো, আপনি সত্যি করে জানেন কি, দাসীদের সাথে যৌন সম্পর্কের বৈধতা বিষয়ক এ আইনটি, কোরআনের কোন্ আয়াত দ্বারা রহিতকরণ করা হয়েছে? আমি নিশ্চিত জানি, এ বিষয়ে আপনি পবিত্র কোরআনের এমন কোন আয়াত উপস্থাপন করতে পারবেন না। অতএব এটি সুস্পষ্ট ভাবে প্রমাণিত যে, দাসীদের সাথে যৌন সম্পর্কের বৈধতা বিষয়ক পবিত্র কোরআনের এ আইনটি আগেও ওকে ছিলো, এখনো ওকে আছে এবং কেয়ামত পর্যন্ত ওকে থাকবে। যেহেতু এটি কোরআনের আইন, তাই যে কোন কালে একে সক্রীয় রাখার, মানে বাস্তবায়িত রাখার এ গুরু দায়িত্ব মুসলমানদের। না হয় কোরআনের একটি আইন যে, নিষ্ক্রীয় হয়ে কোরআনের তুল্যমান যে মানুষের নিকট কমে যাচ্ছে বলে মনে হয়!!
আমার মতে বর্তমানেও মুসলমান গণ, পবিত্র কোরআনের এ আইনকে জিন্দা করার সংগ্রামে ব্রত হলে; তাদের অশেষ এবং অশেষ নেকী হাসিল হবে ইনশা'আল্লাহ! এবং সমাজ, দেশ ও বিশ্বের কিছু মজলুম মা বোন, তাদের উপর নিপীড়িত করা অবর্ণনীয় জুলুম থেকে নিষ্কৃতি পাবে! তারা পাবে একটি শান্তিময় ঠিকানা। তারা পাবে একজন অভিভাবক। মুসলমানদেরকে এখানে আরো বুঝতে হবে যে, কেয়ামতের আগে দিন দিন মানুষের চরিত্র ও বৈশিষ্ট্য খারাপ হবে এবং এ অবস্থায় ঈমানদার হবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দূর্বলেরা। যুক্তি অনুযায়ী আমরা বুঝতে পারি দিন দিন ভালো মুসলিম পূরুষের সংখ্যাও একেবারেই কম হবে। কিন্তু ২/১ জন মুসলিম ভালো পুরুষ যদি থাকে, তবে তাদেরকে যদি অসহায়, অত্যাচারিত ও মজলুম মানুষদেরকে আগলে রাখার, আশ্রয় দেয়ার, অভিভাবকত্ব করার অথবা কোরআনের আইনকে এক্টিভ রাখার, কোন সুযোগ দেয়া না হয়, তবে এ ধরনের শিশু ও নারীদেরকে কেউ হেফাজত করার থাকবে না বা কোরআনের আইনকে সমুন্নত রাখার সুযোগ থাকবে না। তাহলে আজকের আলোচনা থেকে স্পষ্ট বোঝা গেল দাস-দাসী প্রথা; পবিত্র কোরআনে উল্লেখিত এ প্রথাটি অবশ্যই উত্তম ও ধনী মুসলিমদের জন্য একটি উত্তম প্রথা (যেহেতু এ সংশ্লিষ্ট বিধানটি, এ প্রথা থেকে এসেছে ও বিধানটি উন্নত হওয়ায়, সে হিসেবে অবশ্যই প্রথাটিও উন্নত হয়েছে) এবং এটি কোনক্রমেই শুধু কোন এক কালের বিধান নয়। যেহেতু দূর্বল, অসহায়, ইয়াতিম, মিসকিন ও মজলুম মানুষ সর্বকালেই থাকতে পারে; তাই এটি কেয়ামত পর্যন্ত সর্বকালেই সকলের জন্য রক্ষা কবস হিসেবেই থাকবে। সুতরাং ধনী ও ভালো মুসলিমদের এ প্রথায় আমল করা উচিৎ এবং নিজেদের চরিত্র সমুন্নত রেখে প্রথাটিকে সদা সক্রীয় রাখা উচিৎ। আবার আমি এও বলছি না যে, বর্তমানে প্রচলিত চাকুরীর নিয়ম অনুযায়ী জীবনের দায়িত্ব না নিয়ে, শুধু প্রতিদিন ৮/১২ ঘন্টা শ্রমের চুক্তিতে চাকুরী দেয়া নাজায়েজ। তবে মহিলা বিভাগে, যেহেতু ঐ ভাবে একজন নারীকে চাকুরী দিলে মালিকের সাথে তাদেরকে পর্দা করতে হয় এবং প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মালিকের সাথে অনৈতিক ও অশালীন সম্পর্কের একটা নাজায়েজ অবস্থা সৃষ্টি হতে পারে। তাই অন্তত নারী বিভাগে আমরা ইসলামের প্রাথমিক এ দাসী প্রথার প্রচলন রাখতে চেষ্টা করবো ইনশা'আল্লাহ! এছাড়া নারীরা এমনিতেই বাবার বাড়ি ছেড়ে স্বামীর বাড়িকে বরন করতে হয়। তাহলে এখানে মালিকের বাড়ি বরন করবে এবং এটি তাদের জন্য সহজ হবে! কারণ কর্মের সাথে বিয়ের মতোও হয়ে গেল! গরীব ও অসহায় মহিলাগণ যৌতুকের বিড়ম্বনা থেকেও তারা বাঁচলো!
-সমাপ্ত-
0 মন্তব্যসমূহ